Select Language

[gtranslate]
১২ই পৌষ, ১৪৩১ শুক্রবার ( ২৭শে ডিসেম্বর, ২০২৪ )

।। নৃত্যশিল্পী পূজা সেনগুপ্ত পেলেন ‘ফ্রেন্ডশিপ মেডেল’ ।।

ভিয়েতনাম রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে বাংলাদেশের নৃত্যশিল্পী পূজা সেনগুপ্তকে ‌‘ফ্রেন্ডশিপ মেডেল’ সম্মাননায় ভূষিত করা হয়েছে। বাংলাদেশ-ভিয়েতনাম বন্ধুত্বের সম্পর্ককে সুদৃঢ় করায় অবদান রাখা এবং ‘হোচিমিন: আ জার্নি টু এক্সপ্লোর দ্য লাইট উইদইন’ শিল্পকর্ম নির্মাণে অসাধারণ নৈপুণ্য প্রদর্শনের জন্য এ সম্মাননা দেয়া হয় তাকে।

এ উপলক্ষে ঢাকাস্থ ভিয়েতনাম দূতাবাসে বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ভিয়েতনাম দূতাবাস। উক্ত অনুষ্ঠানে ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট-এর পক্ষ থেকে পূজা সেনগুপ্তর হাতে মেডেল, সার্টিফিকেট, পুষ্পস্তবক, পুরস্কার মূল্য ও শুভেচ্ছা উপহার তুলে দেন ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত ফাম ভিয়েত চিয়েন।

এ বছর একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবে এই পুরস্কার পেয়েছেন তরুণ নৃত্যশিল্পী ও সাংস্কৃতিক উদ্যোক্তা এবং তুরঙ্গমীর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক পূজা সেনগুপ্ত। ভিয়েতনামের সাথে অন্যান্য দেশের সম্পর্কের উন্নয়ন এবং নিজ কর্মক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ভিয়েতনামের রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে এই পুরষ্কার প্রদান করা হয়, যা বিদেশিদের জন্য ভিয়েতনামের সর্বোচ্চ পর্যায়ের রাষ্ট্রীয় সম্মাননাগুলোর একটি।

পূজা সেনগুপ্ত বলেন, “বাংলাদেশের সংস্কৃতি এবং নাচকে বিশ্বমঞ্চে সুপ্রতিষ্ঠিত করার যে প্রত্যয় নিয়ে তুরঙ্গমী কাজ করছে, এই পুরস্কার প্রাপ্তি সেই পথে একটি মাইলফলক। দেশীয় নৃত্যাঙ্গণে এরকম দৃষ্টান্তও বিরল।”

২০১৯ সালে কিংবদন্তি নেতা হোচিমিন এর জীবন নিয়ে একটি নৃত্য প্রযোজনা নির্মাণের জন্য তুরঙ্গমীকে আনুষ্ঠানিক চিঠি দেয় ভিয়েতনাম দূতাবাস। ৫-৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তুরঙ্গমী রেপার্টরি ড্যান্স থিয়েটার-এর প্রযোজনায় এবং ভিয়েতনাম সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় প্রথম মঞ্চে আসে বিশ্বের প্রথম জীবনীভিত্তিক ড্যান্স থিয়েটার ‘হোচিমিন’। প্রথম প্রদর্শনীতেই দর্শক, সমালোচক, মিডিয়া এবং দেশি ও বিদেশি দর্শকদের কাছে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয় প্রযোজনাটি।

ড্যান্স থিয়েটার ‘হোচিমিন’ পূজা সেনগুপ্তর একটি মৌলিক প্রযোজনা, যা ঐ বছরই ইউনেস্কোর ইন্টারন্যাশনাল ড্যান্স কাউন্সিল-এর প্যানোরমায় প্রথম বাংলাদেশি প্রযোজনা হিসেবে জায়গা করে নেয়। প্যানোরমায় পূজা সেনগুপ্তর ‘হোচিমিন’ প্রযোজনাটিকে বিশ্বের প্রথম জীবনীমূলক নৃত্য নাটক হিসেবে উল্লেখ করা হয়। ৪০ মিনিট দৈর্ঘ্যের এই প্রযোজনার মূল ভাবনা, নকশা, পাণ্ডুলিপি, নৃত্য নির্মাণ ও নির্দেশনায় ছিলেন পূজা সেনগুপ্ত। ২০১৭ সালে ভিয়েতনাম সরকারের আমন্ত্রণে আন্তর্জাতিক নৃত্য উৎসবে অংশগ্রহণের জন্য সরাসরি প্রতিযোগিতা করে নির্বাচিত হয় তুরঙ্গমীর আরেকটি জনপ্রিয় প্রযোজনা ‘অনামিকা সাগরকন্যা’। সে সময় পূজা সেনগুপ্তর নেতৃত্বে তুরঙ্গমীর ১০ সদস্যের দল উৎসবে অংশগ্রহণ করে ও পুরস্কৃত হয়।


তুরঙ্গমী বিশ্বাস করেন, আন্তর্জাতিক দর্শকদের মাঝে নিজেদের সংস্কৃতি ছড়িয়ে দেবার পাশাপাশি নিজের দেশের সংস্কৃতি নিয়ে অঞ্চল ভিত্তিক গবেষণাও সমানভাবে জরুরি। তাই বিদেশে পরিবেশনার পাশাপাশি এখন থেকে তুরঙ্গমী বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় পরিবেশনা ও সাংস্কৃতিক আদানপ্রদান ভিত্তিক কর্মশালা করতে আগ্রহী। এই ধারাবাহিকতায় আগামী ৩০ ডিসেম্বর ২০২২ বগুড়া জেলায় একটি নৃত্য উৎসবে অংশ নিবে তুরঙ্গমী নৃত্যদল। উৎসবে পূজা সেনগুপ্তর নৃত্য নির্মাণ ও নির্দেশনায় ‘নন্দিনী’র ৫১তম মঞ্চায়ন অনুষ্ঠিত হবে।


২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বাংলাদেশের নাচের নিজস্ব ধারা নির্মাণ ও নাচে পেশাদারিত্ব অর্জনের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে তুরঙ্গমী।

Related News

Also Read