প্রদীপ কুমার সিংহ
বৃহস্পতিবার সকালে বারুইপুর থানার অন্তত বেগমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে ২০০ কলোনী এলাকায় গিয়ে দেখা যায় ওএনজিসি কোম্পানির ঠিকাদাররা জোড় কদমে কাজ করছে। ওই এলাকার মানুষ ও ঠিকাদারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়। প্রায় তিন বছর ধরে বারুইপুরে প্রায় হাজার একর জমিতে ও এন জি সি পক্ষ থেকে মাটির নিচে তেলের ভান্ডার বা গ্যাসের ভান্ডার আছে কিনা তার খোঁজে তল্লাশি চালায়। অবশেষে যেটা জানা যাচ্ছে বেগমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের দুশো কলোনির এলাকায় প্রায় ২৫ থেকে ৩০ বিঘে জায়গাকে ওএনজিসি কোম্পানির ঠিকাদারা পুরোপুরি ঘিরে দিয়েছে কাঁটা তার দিয়ে। এই কাজটি ঠিকাদারদের সময় লেগেছে প্রায় তিন মাস ধরে। ২০০ থেকে ২৫০ জন শ্রমিক নিয়ে এই কাজটি করে। সম্ভবত সেখানেই তেলের বা গ্যাসের ভান্ডার মিলতে পারে।
উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরের পরে এবার বারুইপুরে তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের ভান্ডার মিলবে? এই কাজের জন্য তিন বছর ধরে পরীক্ষামূলুক খনন কাজ শুরু করতে চলেছে ও এন জি সি। ইতিমধ্যেই ওই জায়গায় মেশিন যাওযার জন্য রাস্তার কাজ জোরকদমে শুরু হয়েছে। পাশাপাশি, শ্রমিকদের ও অফিসারদের থাকার রুম, কনফারেন্স রুম সবই নির্মাণ চলছে। এই প্রসঙ্গে বারুইপুর পূর্বের বিধায়ক বিভাস সরদার বলেন, ১ হাজার একরের বেশি জমিতে ও এন জি সি এই কাজ করবে। প্রাথমিক ভাবে ১০০ একর জমিতে কাজ শুরু হয়েছে। এর ফলে এলাকার আর্থিক সমৃদ্ধি ঘটবে। কর্মসংস্থান এর পথ খুলতে পারে।
জানা গিয়েছে, বারুইপুর পূর্ব বিধানসভার বেগমপুর পঞ্চায়েতের ২০০ কলোনী এলাকায় এই কাজ শুরু হয়েছে। রাস্তা থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার ভিতরে মাঠে এর কাজ হচ্ছে। তিন বছরের চুক্তির ভিত্তিতে স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে জমি নেওয়া হয়েছে। এর জন্য কৃষকরা ২ লক্ষ টাকা করে পাবেন। রিক মেশিন (খননকারী মেশিন)ঢোকার জন্য রাস্তার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। ও এন জি সি সূত্রে জানা গিয়েছে, যে কোনোও দিন এই মেশিন ঢুকলেই খননকাজ শুরু হয়ে যাবে। স্থানীয় পঞ্চায়েত এর উপ প্রধান রিয়া বর্মন বলেন, ও এন জি সি কর্তারা ১০০ শতাংশ আশাবাদী এখানে খনন চালিয়ে মিলবে প্রাকৃতিক গ্যাস ও তেল। এলাকার মানুষজন এই কাজের দিকে তাকিয়ে আছেন। কারণ, অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটবে গোটা পঞ্চায়েত এলাকার। এই কাজে এলাকার মানুষজনও খুশি। অনেকেই বলেন, খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস যদি পাওয়া যায় তবে এলাকার উন্নতি সাধন হবে। প্রসঙ্গত, এই বেগমপুর পঞ্চায়েত এলাকার প্রায় বেশিরভাগ মানুষজন বাজি শিল্পের উপরে নির্ভরশীল।নানা আতসবাজি বানিয়েই তাঁদের সংসার চলে। কিন্তু তিন বছর খনন কাজের পরে যদি তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের সন্ধান মেলে বিকল্প কর্মসংস্থানের দরজা খুলতে পারে তাঁদের। তবে বেগমপুর পঞ্চায়েতের মানুষ মনে করছে এলাকায় তেল বা গ্যাস পাওয়া গেলে তাদের অনেক রাস্তাঘাটে উন্নয়ন হবে।