পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা ১ ব্লকের প্রত্যন্ত এলাকার বহলিয়া, বরিশা,জুকি, মুণ্ডমারাই ও বলিহারপুর সহ প্রায় ৬টি গ্রামের প্রায় দেড়শতাধিক ছাত্র-ছাত্রীরা বহলিয়া জুনিয়র হাই স্কুলে পড়াশোনা করে। বেশ কয়েক বছর ধরে এই বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা পঠন-পাঠনের জন্য শ্রেণিকক্ষের অভাবে চরম সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। পুরনো দুটি ক্লাসরুম সহ বারান্দায় পঞ্চম শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীদের ক্লাস চালাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে শিক্ষক শিক্ষিকাদের। পঞ্চম থেকে অষ্টম পর্যন্ত বিদ্যালয়ের সরকারি অনুমোদন থাকলেও পাশাপাশি আর কোন বিদ্যালয় না থাকায় অন্য বিদ্যালয়ের সহযোগে নবম ও দশম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীরা পড়াশোনা করে এই বিদ্যালয়ে। সমস্যার কথা জানিয়ে এলাকার জন-প্রতিনিধি থেকে বিডিও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বারে বারে আবেদন সহযোগে দরবার করেছেন প্রধান শিক্ষক মিন্টু সরকার ও সহশিক্ষক শিক্ষিকারা। কোন কাজ হয়নি। শেষমেষ প্রধান শিক্ষক ছাত্র-ছাত্রীদের অসুবিধার কথা ভেবে নিজে ৭ লক্ষ টাকা ব্যক্তিগত লোন করে দোতলায় একটি ক্লাস রুম তৈরি করেছেন। সেই লোনের টাকা প্রতি মাসে নিজের বেতন থেকে পরিশোধ করছেন।এখন শ্রেণিকক্ষ বেড়ে তিনটি হলেও তাতেও সমুহ সমস্যা মেটেনি। করতে হচ্ছে বারান্দায় চাটাই পাতিয়ে ক্লাস। এর উপর আবার বাড়তি সমস্যা দেখা দিয়েছে বিদ্যালয়ের ছাত্রী টয়লেট ভেঙ্গে যাওয়া। টয়লেট বিহীন বিদ্যালয়!এ আর এক নতুন সমস্যায় জেরবার এই বিদ্যালয়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে নিয়ে স্থায়ী শিক্ষক তিনজন। ছাত্র-ছাত্রীদের পঠন-পাঠনে কোন সমস্যা যাতে না হয় তার জন্য গ্রামের বেকার শিক্ষিত তিন যুবক ও একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষককে অস্থায়ী পার্শ্ব-শিক্ষকে নিযুক্ত করেছেন। তারাও প্রধান শিক্ষকের আহবানে এগিয়ে এসেছেন। তাদের কিছু সাম্মানিক অর্থ, প্রধান শিক্ষক নিজের বেতন থেকেই দেন। নিজের প্রয়োজনের কথা বিন্দুমাত্র না ভেবে এমন উদারতার সাথে রাতদিন এক করে কাজ করে চলেছেন প্রধান শিক্ষক মিন্টু সরকার। প্রধান শিক্ষক মিন্টু সরকার আরো জানাচ্ছেন কোনদিন কিছু না পাওয়া গেলেও আজীবন তার বেতন থেকে একটু একটু করে পরিকাঠামো বাড়িয়ে যাবেন। এলাকার জনপ্রতিনিধি তাপস দে জানিয়েছেন বিষয়টি নিয়ে তিনিও বিডিওর সাথে ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে দরবার করেছেন। শীঘ্রই এই বিদ্যালয়ের জন্য কিছু বরাদ্দ জাতে হয় তার চেষ্টা তিনি আরো করবেন। এমন আদর্শ শিক্ষককে পেয়ে গ্রামবাসী থেকে অভিভাবকেরা তাঁকে স্যালুট জানাচ্ছে। তবে এ হেনো পরিস্থিতির বিষয়ে প্রশাসনের আদৌ হুঁশ ফেরে কিনা সেটাই এখন দেখার।
