Select Language

[gtranslate]
৩রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ মঙ্গলবার ( ১৮ই নভেম্বর, ২০২৫ )

গরীবের ভগবান বেলদার যোগেনবাবু।

তিনি চিকিৎসক। জীবনের বেশ কয়েকটা দশক তিনি কাটিয়ে ফেলেছেন চিকিৎসায়। মূলত ভাঙা হাড় জোড়া করা তার পেশা। অর্থাৎ তিনি হাড়ের চিকিৎসক। তবে নেশা বেশ অদ্ভুত। প্রথম জীবনে শিক্ষকতা করার সুবাদে এবং চিকিৎসা বিজ্ঞান নিয়ে পড়ার কারণে বই তার বন্ধু। বার্ধক্য এবং সারাদিনের ক্লান্তি তাঁর চোখে মুখে ফুটলেও, অবসরে তিনি বসে পড়েন খাতা কলম নিয়ে। বয়স প্রায় আশি পেরোলেও এখনও প্রতিদিন নিয়ম করে তিনি রোগী দেখেন।

তারপর রাত জেগে চলে কলম আর খাতার হিসেব নিকেশ। অবসর সময়কে এভাবে কাটান তিনি। ইতিমধ্যে লিখেছেন একাধিক বই। চিকিৎসা নয়, সাহিত্য নিয়েও বেশ আগ্রহী এই চিকিৎসক। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভর্তি থাকে তাঁর চেম্বার। রোগী দেখার ফাঁকে ও রাত জেগে চলে আর এই কাজ। সারাদিন সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার পাশাপাশি তার এই বিশেষ ভাবনাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সকলে।

 

বেশ কয়েক দশক ধরে তিনি যুক্ত চিকিৎসা পরিষেবায়। সরকারি হাসপাতালে কাজের পর তিনি ব্যক্তিগত চেম্বারে দেখেছেন হাজারও হাজারও রোগীকে। এলাকায় তিনি পরিচিত যোগেন ডাক্তার হিসেবে। তিনি গরিবদের কাছে ভগবান। বেশিরভাগ সময় তিনি বিনামূল্যে কিংবা সামান্য ফি নিয়ে চিকিৎসা পরিষেবা দিয়ে থাকেন। বর্তমানে তার বয়স প্রায় আশি পেরিয়েছে। এই বয়সে এসেও তিনি করেন সাহিত্যের চর্চা। নিয়মিত সাদা কাগজে কলমের আঁচড় কেটে তিনি ফুটিয়ে তোলেন একাধিক উপন্যাস, ছোট গল্প থেকে গান, এমনকি সচেতনতামূলক লেখাও।

 

অবসর সময়ে এবং প্রতিদিন রাত জেগে চলে তার সাহিত্যের চর্চা। ইতিমধ্যেই তার লেখা একাধিক উপন্যাস-গল্প সংকলিত বই প্রকাশিত হয়েছে। এখনও লেখালেখিতে আনন্দ খুঁজে পান এই বৃদ্ধ চিকিৎসক। পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদার বাসিন্দা চিকিৎসক যোগেন্দ্রনাথ বেরা। তিনি পরিচিত হাড়ভাঙা ডাক্তার হিসেবে। বয়সের কারণে চোখে মুখে বলিরেখা স্পষ্ট। প্রথম পর্যায়ে বহু মানুষের ব্লাড গ্রুপ সংকলিত রক্ত দর্পণ নামে একটি বই প্রকাশ করেন। যা জনমানসে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল। ছোট থেকেই তার লেখালেখির হাত। এক এক করে তিনি লিখেছেন বই। প্রকাশও করেছেন তিনি।

ইতিমধ্যে তাঁর লেখা একাধিক বই প্রকাশিত হয়েছে। বেশ কয়েকটি প্রকাশের পথে। এছাড়াও তিনি যুক্ত একাধিক ক্লাব সংগঠনের সঙ্গে। তিনি লিখেছেন একাধিক সিনেমার স্ক্রিপ্টও। রাত জেগে অবসর সময়ে চলে তার এই কাজ। সারাদিনের কাজের পর বাড়তি সময় তিনি নষ্ট করতেই চান না। তার সঙ্গে থাকা একটি ডায়েরিতে লিখে চলেন এক একটি লাইন। যা সৃষ্টি করে আস্ত একটি বই। চিকিৎসা পরিষেবার পাশাপাশি সাহিত্যে ডুবে থাকেন এই চিকিৎসক। ‘গরিবের ভগবান’ যোগেন বাবুর এই ভাবনা এবং তার দিনযাপন সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। তার এই ভাবনাচিন্তাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সমাজের সর্বস্তরের মানুষ

Related News

Also Read