Select Language

[gtranslate]
১২ই পৌষ, ১৪৩১ শুক্রবার ( ২৭শে ডিসেম্বর, ২০২৪ )

।। বাঙালীর আবেগ ।।

অমিত রায়:-সারা বছর সংসারে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে নিজের সম্বল ভাঙ্গা চশমাটিকে সারিয়ে পুজোতে পরিবারে সকলকে নিয়ে ঠাকুর দেখতে যাওয়া মানুষটি যে কারও বাবা। সেই ত্রিশ বছর এক টানা সংসারে নানা অভাবের মাঝেও পুজোয় একটি দিন সুগন্ধী চাল আর মাংস দিয়ে খাবার রান্না করা মানুষটি যে কারও মা। শ্বশুর বাড়ি সবার খেয়াল রাখা মেয়েটি স্বামীর দেওয়া পয়সা বাঁচিয়ে পুজোতে ভাইকে জামা কিনে দেওয়া ভালোলাগার মানুষটি কারও দিদি। বেকারত্বের অভিশাপের মাঝেও নিজ টিউশন থেকে পয়সা জমিয়ে পুজোতে দিদিকে একটি শাড়ী দেওয়া ছেলেটি যে কারও ভাই।

সময়ের অভাবে বহুদিন খোঁজ না নেওয়া এমন একজনকে বছরে একটি দিন ফোন করে বলা কেমন আছিস মানুষটি যে কারও পুরানো বন্ধু। নিজে কিছু না নিলেও বউ আর ছেলেকে পুজোয় কিছু দিতে পারার শান্তি পাওয়া মানুষটি যে কারও স্বামী।

অষ্টমীর দিন পরিবার নিয়ে অঞ্জলী দিয়ে স্বামীর আগে শাখা, পলা আর সিঁদুর নিয়ে যেন চলে যেতে পারে মহামায়ার কাছে এমন প্রার্থনা করা মানুষটি কে কারও সহধর্মিণী। পুজোতে অনাথ, অসহায় আর দুঃস্হদের পাশে দাঁড়িয়ে নতুন জামা কাপড় ও খাবার দেওয়া মানুষগুলি যে সমাজে মানবতার ফেরিওয়ালা।

নতুন শাড়ী আর পাঞ্জাবী পরে মন্ডপে একটি মেয়ে আর একটি ছেলের একে অন্যর দিকে প্রথম দর্শনের শিহরণ ভালোলাগা। সারাদিন ঠাকুর দেখার মাঝেও মুঠোফোনে অনলাইন হওয়ার পর নিজের একান্ত মানুষের কোন ম্যাসেজ এলো কিনা সেটার উপলব্ধি করা যে কারও উপর অজস্র ভালোবাসা। সকল সুখ আর আনন্দ ছেড়ে নবমীর রাতে বিবাহিত সকল নারী ভাই, বোন, মা বাবাকে নিয়ে ঠাকুর দেখার যে স্বর্গীয় সুখের খোঁজ পায় সেই ভালোলাগার ঠিকানা যে বাপের বাড়ী।

দশমী পুজো শেষ, মন খারাপ হলেও আসছে বছর আবার হবে এই সুরে মায়ের ভাসানের পর মা, বাবা, কাকু, যেঠুদের পা ছুঁয়ে প্রনাম করে বিজয়ার আশীর্বাদ নেওয়ার অনন্ত তৃপ্তির ঠিকানা হলো যে পরিবার।

আর এই সকল অনুভূতিকে এক সুঁতোয় বেধে বাঙালীরা বছরে পাঁচটি দিন হৃদয়ের মাঝে যে আবেগ বপন করে তারই নাম যে দুর্গাপূজা ।।

Related News

Also Read