নন্দীগ্রামের মাটিতে দাঁড়িয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার প্রবীন রাজনীতিবিদ শিশির অধিকারীর মান বাঁচালেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছেলে শুভেন্দুর কৃতকর্মের জন্যে এই বয়স্ক মানুষটাকে টানাহেঁচড়া না করার জন্যে কর্মীদের নির্দেশ দিলেন অভিষেক।একই সাথে শুভেন্দু অধিকারীর নির্বাচনী কেন্দ্র নন্দীগ্রামের মাটিতে দাঁড়িয়ে তাঁকে রাজনৈতিক ভাবে এলাকা ছাড়া করার হুশিয়ারি দিয়েছেন তৃনমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারন সম্পাদক।
সভার শুরু থেকে বারবার কখনো শুভেন্দুর নাম নিয়ে,আবার কখনো নাম না নিয়ে আক্রমন করেছেন অভিষেক।অভিযোগ করেন, বিজেপির রাজনীতি মানেই প্রতিহিংসা এবং কুৎসা। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দলকে দিয়ে বিরোধীদের হেনস্থা করার কৌশল নেয় বিজেপি। কিন্তু মানুষ তার জবাব দেবে। আবারও শুভেন্দুকে আক্রমণ করে বলেন যত কুৎসা করবি, তত গর্তে ঢুকবি। দেখবি আর জ্বলবি, লুচির মতো ফুলবি। ওর মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত খালি বেইমানি। আর মুখে হতাশার ছাপ স্পষ্ট। এই সিবিআই, এই ইডিই ওকে জেলে ঢোকাবে। কারণ, সব সময় বিজেপি ক্ষমতায় থাকবে না।সেই সময়েই শ্রোতাদের মধ্যে থেকে আওয়াজ ওঠে চোর চোর চোরটা শিশির বাবুর ছেলেটা।
তখনই হাত নেড়ে কর্মীদের স্লোগান থামতে বলেন অভিষেক। এর পর তিনি বলেন, তাঁর (শুভেন্দু) জন্য তাঁর বাবাকে (শিশির)কেন বদনাম করছেন? উনি বয়স্ক লোক। নিজের পিঠ বাঁচাতে ও বিজেপিতে গিয়েছে। নিজের পিঠ বাঁচাতে বাবা-ভাই সবাইকে বলি করে দিয়েছে।সারা দিন স্বপনে-স্বয়নে -জাগরনে জপে যাচ্ছে ভাইপো ভাইপো।মামলার ভয়ে নাম নিতে পারেনা।
চণ্ডীপুর থেকে ২০ কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে রাত্রি ১০টা ১০ মিনিটে নন্দীগ্রাম পৌঁছান তৃনমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারন সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।নন্দীগ্রাম বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন সভা মঞ্চ থেকে অভিষেক বলেন এত রাতে এত মানুষ আমাকে দেখতে আসেননি। আসলে নন্দীগ্রামের মাটি থেকে গদ্দারকে উৎখাত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মানুষ।অভিষেক বললেন,এই জমায়েত এই বার্তাই দিচ্ছে যে গদ্দারদের রাজত্ব শেষ হতে চলেছে। গদ্দারকে তাড়াব। কিন্তু দায়িত্ব আপনাদের নিতে হবে। আপনাদের গায়ে হাত দিলে আমি ছুটে আসব। গদ্দারদের বলব, ক্ষমতা আছে এই জনসমর্থন নিয়ে মিটিং করার? বলতো নন্দীগ্রাম নাকি অধিকারীদের মাটি । দেখুন নন্দীগ্রাম তৃণমূলের ঘাঁটি। মানুষের ঘাঁটি।
শুভেন্দুকে নিশানা করে অভিষেক বলেন, আরে আমার শরীরে বেইমানের রক্ত নেই। আমার গলা কাটলেও ‘জয় বাংলা’ স্লোগান বেরোবে। দিল্লীর কাছে আমার মেরুদন্ডটা বিক্রী করে দেয়নি। ক্ষমতা থাকলে আমায় গ্রেফতার করুক ইডি-সিবিআই।সেই সময় ফের কর্মীদের মধ্যে থেকে স্লোগান উঠতে শুরু করে চোর চোর। থামিয়ে দেন অভিষেক।বলেন বেইমানটার জন্যে কেন ওর বাবাকে টানছো।২০২১ সালের নির্বাচনে খুঁটি পুজা হয়ে গেছে।২০২৪ সালে বিজেপি ফিনিষ।তারপরেই এই ইডি-সিবিআই ওকে জেলে ঢোকাবে।পাপ তার বাপকেও ছাড়ে না।
অভিষেক বলেন এবার লড়লে, ৫০ হাজার ভোট এ তৃণমূল জিতবে। বিজেপি আর এক বছর। ওরা পারবে ২০ কিলোমিটার হাঁটতে? মুখটা ফুলছে , চোখে ভয় , মুখে হতাশা। গদ্দাররা ভয় দেখালে , ঘিরে ফেলবেন । আমার দু’ঘণ্টা লাগবে আসতে। পঞ্চায়েতে, লোকসভায় গদ্দার হটাও নন্দীগ্রাম বাঁচাও। বুক চিতিয়ে লড়াইয়ের জন্য তৈরি থাকুন।আজ ছোট্ট একটা ট্রেলার দিলাম , তিন মাস পর সিনেমা দেখাব।