পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহাত্মা গান্ধী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থের অভাবে নির্মীয়মাণ ভবনের বন্ধ হয়ে যাওয়া কাজ দ্রুত সম্পূর্ণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত শূন্যপদে স্থায়ী অধ্যাপক নিয়োগ সহ পঠন-পাঠনের পূর্ণাঙ্গ পরিকাঠামো গড়ে তোলার দাবিতে মহিষাদলে শিক্ষা কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয় ৷
কনভেনশনে সভাপতিত্ব করেন মহিষাদল রাজ কলেজের অধ্যাপক মানস কুমার জানা ৷ কনভেনশনে মূল প্রস্তাব পাঠ করেন কনভেনশনের অন্যতম আহ্বায়ক বিশ্বজিৎ রায়৷ এরপর মূল প্রস্তাবের সমর্থনে বক্তব্য রাখেন শিক্ষক বাসুদেব দাস, অধ্যাপক নোটন সিং,আইনজীবী মৌমিতা দাস,মহিষাদল রাজ কলেজের গ্রন্থাগারিক বিশ্বজিৎ চৌধূরী,অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক শুভেন্দু শেখর দাস,দ্বিজেন্দ্রনাথ বেতাল সহ বিশিষ্ট শিক্ষক অধ্যাপকবৃন্দ এবং জেলার বিভিন্ন কলেজের থেকে আগত ছাত্র ছাত্রীরা৷
এই কনভেনশনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশিষ্ট অধ্যাপক ড. দেবব্রত বেরা এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সদস্য দিলীপ মাইতি ৷ বক্তারা বলেন ,— “পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মতো শিক্ষায় এগিয়ে থাকা জেলায় যেখানে ১৯ টি ডিগ্রি কলেজ রয়েছে , সেখানে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা অত্যন্ত জরুরী ৷ পূর্ব- পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলার বিপুল সংখ্যক ছাত্রছাত্রী কলেজ পাশ করে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা লাভের উদ্দেশ্যে আবেদন করে কিন্তু আসন সংখ্যার অপ্রতুলতার কারণে এবং দূরত্বের কারণে বহু ছাত্রই মেধা থাকা সত্ত্বেও উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়৷ তাই পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবী ছিল দীর্ঘদিনের, যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে গরীব,নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের ছাত্রছাত্রীরা অল্প খরচে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পায় ৷ মহিষাদলের কাপাসএড়্যায় মহাত্মা গান্ধী বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ায় জেলাবাসী আশান্বিত হয়েছিলেন। কিন্তু নির্মাণকাজ শুরু হতে না হতেই সরকারি অর্থ বরাদ্দের অভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়া অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা। আমরা জানি, সরকার বহু কোটি টাকা ব্যয় করে নানান প্রকল্প চালু করছে। কিন্তু শিক্ষার মত এরকম একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বরাদ্দের ক্ষেত্রে রাজকোষ শূণ্য এমন অজুহাত দেওয়া মোটেও যুক্তিযুক্ত নয় ৷ অবিলম্বে সরকারকে শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যয় বরাদ্দ বাড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণে প্রয়োজনীয় অর্থ প্রদাণ করতে হবে ৷”
জেলার ১৯ টি কলেজ থেকে প্রায় তিন শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী আজকের কনভেনশনে প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত হয় ৷ এছাড়াও বিভিন্ন স্কুল-কলেজ থেকে বিশিষ্ট শিক্ষক- অধ্যাপক, জেলার শুভবুদ্ধিসম্পন্ন নাগরিক,চিকিৎসক থেকে শুরু করে অভিভাবকেরাও এই কনভেনশনে যোগদান করেন ৷ কনভেনশন থেকে অধ্যাপক মানস কুমার মাইতিকে সভাপতি এবং বিশ্বজিৎ রায় ও বাসুদেব দাসকে যুগ্মসম্পাদক করে ৬২ জনের কমিটি গঠিত হয়। কনভেনশন থেকে আগামীদিনে আন্দোলন পরিচালনার জন্য নানান পরিকল্পনা গৃহীত হয়৷