Select Language

[gtranslate]
২৮শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ শনিবার ( ১৩ই ডিসেম্বর, ২০২৫ )

উত্তর কলকাতার সংঘতীর্থের ৫৮ বছরের পুজোর থিম “প্রথা” ।

ইন্দ্রজিৎ আইচ :- সামনেই শারদ উৎসব। সেই চিরাচরিত নিয়ম মেনে
কলকাতায় চারদিকে চলছে খুঁটি পুজোর আয়োজন। এই খুঁটি পুজোই এবার হল উত্তর কলকাতার শোভা বাজার – হাতি বাগানের কাছে লাহা কলোনির মাঠে। উদ্যোগে ‘সংঘতীর্থ’। খাতায় কলমে পুজো আসতে এখনও মাস দুয়েকের বেশিই বাকি কিন্তু ঘরের মেয়ে উমা বছরে তো একবারই আসেন। তাও আবার দিন চারেকের জন্য। তাঁর এই আগমনকে ঘিরে প্রতিটি বাঙালি নিজেদের সমস্ত দুঃখ -কষ্ট, মান-অভিমান ভুলে মেতে ওঠেন তাঁর আরাধনায়। চারদিন এই কর্মযজ্ঞ চলে বাঙালির ঘরে-ঘরে। ফলে এর প্রস্তুতি আগে থেকেই নিতে হয় প্রত্যেককে। এই প্রস্তুতিরই বার্তা যায় খুঁটি পুজোর মধ্য দিয়েই। সঙ্গে এ বার্তাও যায়, মা আসছেন। সেই কারণে আজকাল দুর্গাপুজোর শুরুতে এই খুঁটি পুজোও এক বিশেষ ভূমিকা নিয়েছে। এই পুজো নিয়ে
ক্লাবের সভাপতি দীপঙ্কর কুন্ডু এই প্রতিবেদক কে জানালেন
লাহা কলোনির মাঠে সংঘতীর্থের এই পুজো কিন্তু আজকের নয়। দেখতে দেখতে এই পুজো পার করেছে ৫৭ বছর। এবার পা দিল ৫৮-তে। এখানে আরও একটা কথা বলতেই হয়, তা হল সনাতনী প্রথাতেই এতকাল পুজো হয়ে এসেছে সংঘতীর্থের। তবে গত বছর থেকে ভাবনা-চিন্তায় বদল আনি আমরা । শুরু হয় থিম পুজো। ২০২২-এর থিম পুজো বাঙালির হৃদয় ছুঁয়ে যায়।
সেই থিম ছিলো “মুখোশ”। সেই কারণে ২০২৩-এও থিম পুজো করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
রবিবার ৬ অগাস্ট সকালে খুঁটি পুজোর মধ্য দিয়ে সংঘতীর্থের দুর্গাপুজোর ঢাকে পড়ল কাঠি। এদিনের এই খুঁটি পুজোর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা। ছিলেন তাঁর কন্যা ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পূজা পাঁজাও। সংঘতীর্থের পুজো পড়ে ১০ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে। ফলে নিজের ঘরের পুজো হিসেবে উপস্থিত থাকতে দেখা যায় পুরপিতা সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। একইসঙ্গে উপস্থিত ছিলেন শ্যামপুকুর থানার অফিসার ইন-চার্জ পরিতোষ ভাদুড়িও। এদিন শুধু খুঁটিপুজোই যে হয়েছে তা কিন্তু নয়। মন্ত্রী শশী পাঁজার হাতে উদ্বোধন হল ব্যানারেরও।সঙ্গে সামনে এল ২০২৩-এর দুর্গাপুজোর থিম ‘প্রথা’।মন্ত্রী শশী পাঁজা জানালেন আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আমরা অনেক কিছুই মেনে চলি। সে পুজোই হোক বা অন্য যে কোনও ক্ষেত্রে এই প্রথা মেনে চলাটাই রেওয়াজ। তবে বর্তমান প্রজন্ম এই ট্র্যাডিশন বা প্রথা থেকে অনেকটাই বেরিয়ে আসছে বা আসতে চাইছে। বর্তমান এবং পুরাতনের এই সংঘাতের আবহেই সম্ভবত শিল্পী শঙ্কর পাল পুজোর থিম হিসেবে বেছে নিয়েছেন ‘প্রথা’কে। এখানে ‘সম্ভবত’ শব্দবন্ধ ব্যবহার করার কারণ রয়েছে। খুঁটিপুজোর দিন পুজোর থিম বলা হলেও এতে ঠিক কোন দিকটা তুলে ধরা হবে তা বলতে নারাজ সংঘতীর্থের উদ্যোক্তা থেকে শিল্পীও। ওঁদের বক্তব্য, এটা চমকই থাকুক। আগে থেকে জেনে গেলে থিম পুজোর আকর্ষণটাই থাকে না। এই পুজোর মাতৃ শিল্পী হলেন সোমেন পাল। তিনিও থিম মেনে প্রতিমা নির্মাণ করবেন বলে জানালেন। এই খুঁটি পুজোয় উপস্থিত ছিলেন বিচারক তপন কুমার মন্ডল, ক্লাবের সম্পাদক মানিক সেনাপতি, কোষাধক্ষ্য স্বপন পাল সহ আরো অনেক বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ।
এদিনের খুঁটি পুজোর সঙ্গে ছিল নিখরচায় স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থাও। ছিল ডেন্টাল ক্যাম্প, সুগার টেস্ট, প্রেসার মাপার সু বন্ধবস্ত। স্বাস্থ্য শিবির বা রক্তদান শিবির কলকাতার মানুষজন দেখতে অভ্যস্ত হলেও দাঁতের স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থার জন্য খুব একটা শিবিরের আয়োজন হতে দেখা গেছে বলে মনে করতে পারছেন না অনেকেই।ফলে পুজোর শুরুতেই যে একটা বড় চমক দিল সংঘতীর্থ তা না মেনে উপায় নেই। এবার দেখার পুজোয় আরও কী চমক দেখায় পুজোর উদ্যোক্তারা। সবমিলিয়ে এখন আমরা ” প্রথা ” র নতুন চমকের অপেক্ষায় রইলাম।

Related News

Also Read