Select Language

[gtranslate]
২৮শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বৃহস্পতিবার ( ১৩ই মার্চ, ২০২৫ )

সোয়াদিঘী খাল সংস্কারে বাধা, ৭ ফেব্রুয়ারি বিক্ষোভের ডাক

তমলুক মহকুমার গুরুত্বপূর্ণ প্রায় ২১ কিমি দীর্ঘ সোয়াদিঘী খাল। যা কোলাঘাট,পাঁশকুড়া,শহীদ মাতঙ্গিনী ব্লকের বিস্তীর্ণ অংশের বর্ষার জলনিকাশীর একমাত্র মাধ্যম। এছাড়াও বোরো মরশুমে রূপনারায়ন নদের জোয়ার জলে ওই খালের মাধ্যমে উপরোক্ত ব্লকগুলির বিস্তীর্ণ চাষযোগ্য জমিতে ধান-পান-ফুল-মাছচাষ হয়ে থাকে। ওই খালের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে কামিনা,জঁফুলি,জয়গোপাল ও মুড়াইল খাল নামে আরো চারটি শাখা খাল। দীর্ঘ ১২ বছর খালগুলি সংস্কার না হওয়ার কারণে বিগত চার/পাঁচ বছর ধরে এলাকায় বর্ষার সময় কয়েক’শ হেক্টর জমিতে আমনধানের চাষ বন্ধ। ওই অবস্থায় গত বছর ৩রা অক্টোবর ভুক্তভোগী এলাকার সহস্রাধিক বাসিন্দারা সেচ দপ্তরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। তাতেই প্রশাসনের টনক নড়ে। মজে যাওয়া খালটি,স্বয়ং জেলা শাসক,অতিরিক্ত জেলা শাসক (উন্নয়ন),মহকুমা শাসক,এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার প্রমুখেরা একাধিকবার পরিদর্শন করেন। এরপর উচ্চপর্যায়ের এক বৈঠকের মাধ্যমে রাজ্য সরকারের খনিজ দপ্তরের WBMDTCL সংস্থার মাধ্যমে ‘পালিত ব্রিক ফিল্ড’ নামে এক এজেন্সিকে দিয়ে খালটি পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের নির্দেশ দেন জেলা ও সেচ প্রশাসন। অনেক টালবাহানোর পর সেই কাজ শুরু হয়েছে জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি নাগাদ। খাল সংস্কারের কাজের শুরুতেই সেচ দপ্তরের কাটিং চার্ট অনুসারে কাটতে গিয়ে স্থানীয়দের বাধাদানে বর্তমানে কাজ বন্ধ রয়েছে।
           ওই পরিপেক্ষিতে জেলাশাসক দপ্তরে জেলাশাসকের উপস্থিতিতে আজ এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জেলা শাসক পূর্ণেন্দু মাজী,অতিরিক্ত জেলা শাসক(উন্নয়ন)নেহা বন্দ্যোপাধ্যায়,মহকুমা শাসক(তমলুক),সেচ দপ্তরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার,ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের আধিকারিক,বিডিও শহীদ মাতঙ্গিনী,প্রধান-কাখর্দা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রমুখরা।
বৈঠকে সেচ দপ্তরের কাটিং চার্ট অনুসারে আগামীকাল থেকে খাল সংস্কারের কাজ পুনরায় শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সিদ্ধান্ত হয়েছে,যারা ওই কাজে বাধা দেবে তাদের নামে এফ আই আর করা হবে।
           সোয়াদিঘী খাল সংস্কার সমিতির সম্পাদক মধুসূদন বেরা ও সমিতির উপদেষ্টা তথা পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বন্যা-ভাঙ্গন প্রতিরোধ কমিটির যুগ্ম সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র নায়ক জানান,গত ১৫ই নভেম্বর,২০২৪ থেকে খালটি সংস্কারের কথা থাকলেও প্রায় তিন মাস হতে চলল-এক’শ মিটার খালও সংস্কার করা হয়নি। এলাকাবাসীর অভিযোগ,সোয়াদিঘী লকগেট পার্শ্ববর্তী কাখর্দা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বেশ কিছু জায়গায় খালের ভেতরে থাকা একদল জবরদখলকারী খাল সংস্কারে পদে-পদে বাধা সৃষ্টি করছে। এছাড়াও খালের ভেতরে থাকা বনসৃজনের গাছগুলিও এখনো কাটা হয়নি,যে কারণে খাল সংস্কারের মেশিন ঠিকমতো কাজ করতে পারছে না। ফলস্বরূপ এজেন্সির লোকজন মাঝেমধ্যে মেশিনপত্র তুলে নিয়ে চলে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। এমন অবস্থা চলতে থাকলে আগামী বর্ষার পূর্বে আদৌ খালটি সংস্কার হবে কিনা সন্দেহ।
           এই আশঙ্কা থেকেই আগামী বর্ষার পূর্বেই সেচ দপ্তরের পূর্বের কাটিং চার্ট অনুসারে খালটি পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের দাবীতে ৭ ফেব্রুয়ারী সোয়াদিঘী খাল সংস্কার সমিতির পক্ষ থেকে জেলা শাসক অফিসে বিক্ষোভ-ডেপুটেশন কর্মসূচীর ডাক দেওয়া হয়েছে।

Related News