Select Language

[gtranslate]
২৭শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বুধবার ( ১২ই মার্চ, ২০২৫ )

অন্ত্যোদ্বয় আশ্রমে ১১ দম্পতির গণবিবাহ, কন্যাদের বিদায়ে আবেগঘন বলরাম করণ

ফাল্গুনের পড়ন্ত বেলায় অন্ত্যোদ্বয় অনাথ আশ্রমকে সাক্ষী রেখেই নতুন জীবনে পা রাখলেন ১১জন দম্পতি। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ভগবানপুর ২ ব্লকের পাঁউশি অন্ত্যোদ্বয় আশ্রমের মোট ১১জনের বিয়ের ব্যবস্থা করেছিলেন বলরাম করণ। সহযোগিতা করেন সুপারট্রোন ফাউন্ডেশন। প্রতি বছরই অনাথ আশ্রমে গণবিবাহের আসর বসে। এবছরও তা ব্যতিক্রম হয়নি। আশ্রম- কন্যাদের কেউ বিবাহযোগ্যা হলে তাঁদেরও বিয়ে দেওয়া হয় এই অনুষ্ঠানেই। এ বছরও তেমনই টুম্পা আর মাধবীর বিয়ে দিলেন তাঁদের পালকপিতা বলরাম করণ। এ বার বিয়েতে সোনার গয়না, আসবাব, সাইকেল, পালঙ্ক, আলমারি- দানসামগ্রী হিসেবে তুলে দিয়েছেন বলরাম করণ। শুধু দুই আশ্রমকণ্যাই নয়। বীরভূমের প্রত্যন্ত গ্রামীণ অধ্যুষিত আদিবাসী এলাকা এবং বাইরের সব মিলিয়ে ১১জন মেয়ের বিয়ের ব্যবস্থা করেছেন তিনি। ১১ জনের বিয়ে হয়েছে হিন্দু মতে। আশ্রমে উপস্থিত অসং্খ্য শুভানুধ্যায়ীকে আশ্রমের পক্ষ থেকে নৈশভোজে আপ্যায়িত করা হয়। বিশেষত যখন সাধারণ নিয়মে পৌষ মাসে বিয়ে হয় না। স্নিগ্ধ হেসে বলরাম করণ বলেন, “আসলে ধর্মটা হল মনের ভিতর। বাহ্যিক আড়ম্বরটার কোনও মূল্য নেই। তাই মনের মিলে দু’টি মানুষকে এক করে দিতে এই দিনটির চেয়ে ভাল তিথি  আর কী বা হতে পারে?” কিন্তু চোখের জলে বাঁধ মানেনি। টুম্পা, মাধবী একই সুরে বলেন, বলরামবাবুই আমাদের সবকিছু। তিনি আমাদের বাঁচিয়েছেন। তবে তাঁদের বিদায় দিয়ে কেঁদেছেন বলরাম করণ।

“বুক ফেটে যাচ্ছে। কিন্তু ওরা বড় হয়েছে। ওদের দাম্পত্য জীবন সুখের হোক, মঙ্গলময় হোক,” বলতে বলতেই বুজে আসে তাঁর গলা। সুপারট্রোন ফাউন্ডেশনের ম্যানেজিং ডিরেক্টর বিষ্ণু কুমার ভাণ্ডারি জানিয়েছেন, এটা খুবই আনন্দের দিন। আগের বছর ৯জনের গণবিবাহ দেওয়া হয়েছিল। এবছর ১১জনের গণবিবাহ দেওয়া হয়েছে। আগামীদিনে আশ্রমে অনেক কিছু করার চিন্তা ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি এদিন পাঁউশি অন্ত্যোদ্বয় অনাথ আশ্রমের নতুন প্রবেশদ্বারের উদ্বোধন করেন কলকাতা সুপারট্রোন ফাউন্ডেশনের কর্ণধার বিষ্ণু কুমার ভান্ডারি। তবে এদিন অনাথ আশ্রমে একেবারেই চাঁদের হাট বসেছে৷ আট থেকে আশি, সবাই খুশি। কাঁথির এসডিও শৌভিক ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, আমি এখানে কোন আধিকারিক হিসেবে আসিনি। আমি কাঁথি মহকুমার বাসিন্দা হিসেবে এখানে এসেছি। তবে বলরামবাবুর এই উদ্যোগ খুবই প্রশংসনীয়।

Related News