ঠাকুর খিচুড়ি পছন্দ করতেন। প্রত্যেক অবতারেরই ছিল প্রিয় ভোজ্য বস্তু। এ-বিষয়ে বৈকুণ্ঠনাথ তাঁর লীলামৃতে লিখেছেন :
অযোধ্যানাথ রামচন্দ্রের রাজভোগ, কৃষ্ণের ক্ষীরসর, বুদ্ধের ফাণিত (একপ্রকার মিষ্টান্ন), চৈতন্যের মালসা ভোগ (মৃতপাত্র ভর্তি চিড়া, মুড়কি, দধি), শ্রীরামকৃষ্ণের খিচুড়ি।
এই প্রসঙ্গে একটি মজার ঘটনা মনে পড়ছে। এক নবীন সন্ন্যাসী বেলুড় মঠে ঠাকুরের উৎসবে খিচুড়ি পরিবেশন করছেন। এক প্রবীণ সন্ন্যাসী তাঁকে বললেন, “জান, বেলুড় মঠের প্রসাদি খিচুড়ির শক্তি ও মহিমা? শোনো, তোমাকে একটা ঘটনা বলি।
বেলুড় মঠে ভক্তেরা এলে বাবুরাম মহারাজ খুব যত্ন করে প্রসাদ খাওয়াতেন। এক বছর মঠে বেশি খরচের জন্য টাকার ঘাটতি (deficit) হয়। রাজা মহারাজ বাবুরাম মহারাজকে তা বলতে বাবুরাম মহারাজ বলেন যে, তিনি ভিক্ষা করে ওই ঘাটতি পূরণ করে দেবেন।
এ-সংবাদ উদ্বোধনে পৌঁছলে ব্রহ্মচারী গণেন (উদ্বোধনের প্রকাশন বিভাগের ম্যানেজার) বলেন : ‘বাবুরাম মহারাজ বেলুড় মঠে হোটেল খুলে দিয়েছেন। তিনি কেবল ভক্তদের প্রসাদ খাওয়াতে ব্যস্ত।’ বাবুরাম মহারাজ তাঁর মন্তব্য শুনে বললেন, ‘গণেন ছেলেমানুষ। ও কী জানে?
আমি ভক্তদের প্রসাদ খাওয়াই — ফলে তাদের ভক্তি হয়। তারপর ওই ভক্তির জোরে তারা উদ্বোধনে গিয়ে বই কেনে। ওদের বই বিক্রির পিছনে রয়েছে ঠাকুরের প্রসাদ।’ দেখো, বেলুড় মঠের খিচুড়ি প্রসাদের শক্তি।”
(‘নিবোধত’ জুলাই-আগস্ট ২০২২, স্বামী চেতনানন্দজীর ‘শ্রীরামকৃষ্ণের জন্মোৎসবের ইতিবৃত্ত’ রচনাটির অংশবিশেষ)