পূর্ব মেদিনীপুর জেলার গর্বের আর্থিক প্রতিষ্ঠান কন্টাই কো অপারেটিভ ব্যাঙ্ক।তবে শুধু পূর্ব মেদিনীপুর কিংবা অখন্ড মেদিনীপুর নয়,সারা উত্তর পূর্ব ভারতে এই আর্থিক প্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব অসীম। আরবিআই-র তথ্য অনুযায়ী দেশের উত্তর পূর্ব ভারতের সর্ব বৃহৎ আরবান কো অপারেটিভ ব্যাঙ্ক হল কাঁথির এই সমবায় প্রতিষ্ঠান।তবু এর সমস্যা সমাধানে কেন উদাসীন রাজ্য সরকার,সেই প্রশ্ন ব্যাঙ্ক কর্মচারী ও ব্যাবসায়ী মহলে ।
গেছে গত ৪ ফেব্রুয়ারী ব্যাঙ্ক পরিচালন কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে।তবে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই পরিচালন কমিটির নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হয় ।আর সেই প্রক্রিয়া শুরু হতেই নির্বাচন আটকাতে মাঠে নেমে পড়েন ব্যাঙ্কের একমাত্র অপসারিত চেয়ারম্যান শুভেন্দু অধিকারী ও তার অনুগামীরা।
যদিও গত ৩০ নভেম্বর শুভেন্দু অধিকারী ও অনুগামীদের স্বপ্নে জল ঢেলে কো অপারেটিভ নির্বাচন কমিশনকে নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশ দেন ।এর জেরে নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার,সহযোগী রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ করা হয় ।গত ১০ জানুয়ারি খসড়া ভোটার তালিকা এবং ২৪ জানুয়ারি চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করে ব্যাংক ।এর মধ্যেই কাঁথি পৌরসভার নির্বাচন চলে আসায় থমকে যায় ব্যাংক পরিচালন কমিটির নির্বাচন ।অভিযোগ তার পরে আবার ব্যাংকের নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু করতে গেলে শুভেন্দু অনুগামীরা কলকাতা উচ্চ আদালতে বিচারপতি অরিজিৎ ব্যানার্জি ও কৌশিক চন্দের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করেন।অনুগামীরা নির্বাচন স্থগিত করার জন্য আবেদন জানালেও ২০ এপ্রিল কো অপারেটিভ নির্বাচন কমিশনকে কন্টাই কো অপারেটিভ ব্যাংকের নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশ দেয় ডিভিশন বেঞ্চ।একই সাথে সামসের বেগ নামে ব্যাংকের এক শেয়ারহোল্ডারের করা অভিযোগের ভিত্তিতে দ্রুত নির্বাচন করার জন্য ১৮ মে নির্দেশ দেন কলকাতা উচ্চ আদালতের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য ।শুরু হয় নির্বাচন প্রক্রিয়া । মনোনয়নপত্র গ্রহণের আগেই স্থগিতাদেশকে কলকাতা উচ্চ আদালতের ভ্যাকেশনাল বেঞ্চে বিচারপতি কৃষ্ণা রাওয়ের এজলাসে মামলা করে শুভেন্দু অনুগামী সুকুমার দে নামে এক প্রাক্তন ডাইরেক্টর । আদালত ৯ জুন তারিখ অবধি নির্বাচন প্রক্রিয়ার উপরে স্থগিতাদেশ দেয়। পরে ১০ জুন কলকাতা উচ্চ আদালতের বিচারপতি সম্পা সরকার ফের নির্বাচন প্রক্রিয়া চালু করার নির্দেশ। অভিযোগ তার পরেও কলকাতা উচ্চ আদালতের বিচারপতি অরিজিৎ ব্যানার্জি ও রাই চ্যাটার্জির ডিভিশন বেঞ্চে ফের স্থগিতাদেশ চেয়ে মামলা করে শুভেন্দু অধিকারীর এক অনুগামী।তবে ২৭ জুন সেই মামলাকারী আচমকা মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়ায় কেটে যায় নির্বাচনের জট ।
অভিযোগ ফের নির্বাচন নিয়ে সকলে যখন মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে সেই সময় আচমকা রাজ্য সমবায় দফতর আরও এবং এআরও কে অন্যত্র বদলী করে দেয় ।আর তার জেরেই ফের নির্বাচন নিয়ে অচলাবস্থা তৈরী হয় কন্টাই কো অপারেটিভ ব্যাঙ্কে।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক কন্টাই কো অপারেটিভ ব্যাঙ্কের কর্মচারীরা জানিয়েছেন নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাওয়ার পরে তার নির্বাচন আধিকারীককে বদলী করে দেওয়া নিয়ম বিরুদ্ধ। তার পরেও পূর্ব মেদিনীপুর ২ রেঞ্জ এর এআরসিএস তথা রিটার্নিং অফিসার কৌশিক পুরকাইত এবং সিডিও তথা অ্যাসিস্টেন্ট রিটার্নিং অফিসার শংকর প্রধানকে অন্যত্র বদলী করে দেওয়া হয়েছে।আর এর জেরে ক্ষোভ বাড়ছে ব্যাঙ্ক কর্মী,শেয়ার হোল্ডার ও গ্রাহকদের মধ্যে।
জানা গেছে স্থায়ী পরিচালন কমিটি না থাকায় নিত্যদিন মার খাচ্ছে ব্যাঙ্ক পরিষেবা।গ্রাহকরা অন্য ব্যাঙ্কে চলে যাচ্ছে।তারপরেও কেন সরকার উদাসীন সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠছে শহর জুড়ে ।