পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটাশপুর ২ নং ব্লকের পঁচেট গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত পুরুষোত্তমপুর গ্রামে এবছর ৩০ তম বর্ষে পদার্পণ করলো বার্নিং সান ক্লাবের অষ্টমী কালীপুজো। কালীপুজোর পরে অনুষ্ঠিত এই অষ্টমী কালীপুজো এখন এলাকাজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। কারণ, এ বছরের পুজোয় মণ্ডপ, প্রতিমা ও আলোকসজ্জায় এসেছে এক অনন্য চমক। কুমোরটুলির শিল্পীদের নিপুণ হাতে গড়া প্রতিমা যেন দর্শনার্থীদের মনে দাগ কেটে দিচ্ছে।

ফিতে কেটে ও প্রদীপ প্রজ্বলন করে পুজোর উদ্বোধন করেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিক। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পটাশপুর ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি স্বপন মাইতি, বিশিষ্ট শিল্পপতি আসিস আচার্য, পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মানস রায়, জেলা পরিষদ সদস্য গোলোকেশ নন্দ গোস্বামী, পটাশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক সুরজ আস, পঁচেট ৪ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুরজিত মাইতি, সমাজসেবী স্বদেশ দাস ও বরুন গিরি সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি।

সংস্থার কর্মকর্তা প্রণব কর জানিয়েছেন, ১৯৯৫ সালে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে এই গ্রাম সেই সময় এই অঞ্চলের মানুষ ভগবতীর আশীর্বাদ কামনা করে কালীপুজোর পর অষ্টমী কালীপুজোর সূচনা করেছিলেন। সেই ঐতিহ্য আজও অটুট। তিন দশক ধরে এই পুজো শুধু ধর্মীয় আচার নয়, সামাজিক বন্ধনের প্রতীক হয়ে উঠেছে।

এবছর পুজোর মোট বাজেট প্রায় ৮ লক্ষ টাকা। পাঁচ দিনব্যাপী নানা কর্মসূচিতে থাকছে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবির, বস্ত্র ও শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা এবং স্থানীয় শিল্পীদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ অনুষ্ঠান।
উদ্যোক্তাদের মতে, প্রতিদিনই প্রায় দশ থেকে বারো হাজার দর্শনার্থী ভিড় করছেন এই চোখধাঁধানো মণ্ডপ ও আলোকসজ্জা দেখতে। গ্রামের প্রতিটি গলি আলোয় ঝলমল করছে, চারপাশে বাজছে ঢাকের শব্দ আর উৎসবের গান।
অঞ্চলের মানুষদের মতে, এই পুজো শুধু একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, বরং গ্রামীণ ঐক্য, সংস্কৃতি ও মানবিকতার প্রতীক। পুরুষোত্তমপুর বার্নিং সান ক্লাবের সদস্যদের এই নিষ্ঠা ও ঐতিহ্য আগামী প্রজন্মের কাছে এক অনুপ্রেরণার বার্তা বয়ে আনবে নিঃসন্দেহে।





