প্রদীপ কুমার সিংহ
দুষ্কৃতীদের ছোড়া পাথরে গুরুতর আহত এক রেলযাত্রী, ঘটনায় চাঞ্চল্য। নির্বিকার রেল, আরপিএফ ও জিআরপি। আহত রেলযাত্রির পরিবারের আর্থিক ক্ষতিপূরণের দাবি। পাশাপাশি নিরাপত্তা জোরদার করারও দাবি। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মল্লিকপুরে। শনিবার সকালে শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার মল্লিকপুর স্টেশনে ঢোকার আগে আপ নামখানা লোকাল ট্রেনের গেটের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা রেলযাত্রী মিঠুন মন্ডলের মুখে একটি পাথর লাগে। পাথর লাগার সাথে সাথে মিঠুন মাথা ঘুরে চলন্ত ট্রেন থেকে রেল ট্রাকে পড়ে যাচ্ছিল। পাশে থাকা বন্ধু ও অন্যান্য রেল যাত্রীরা তাকে ধরে নেয়। মল্লিকপুর স্টেশনে ট্রেনটি ঢোকার পরে গুরুতর আহত মিঠুনকে নিয়ে মল্লিকপুর স্টেশনের টিকিট কাউন্টারে রেল কর্মীদের কাছে মিঠুনকে নিয়ে গিয়ে সাহায্য চান মিঠুনের বন্ধু ও অন্যান্য রেল যাত্রীরা। ও তার বন্ধুরা। কিন্তু অমানবিক রেল কর্মীদের কোন সাহায্য না পেয়ে মিঠুনকে নিয়ে মল্লিকপুর এ হরিহরপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। তার মুখের আঘাত গুরুতর হওয়ায় চিকিৎসকরা চিত্তরঞ্জন হাসপাতালে তাকে রেফার করে। মিঠুনের মুখের উপরের পার্টির তিনটি দাঁত পড়ে গিয়েছে। আরো চারটি দাঁত নড়বড়ে অবস্থায় রয়েছে। মুখের উপরে ঠোঁটে সাতখানা সেলাই পড়েছে। কে বা কারা কি উদ্দেশ্যে রেল যাত্রীদের লক্ষ্য করে পাথর ছুটলো বা ছুড়েছে তা এখনো পরিষ্কার নয়।

কিন্তু প্রশ্ন উঠছে রেল যাত্রীদের সুরক্ষা নিয়ে। মিঠুন মন্ডল শনিবার সকাল ৬ টা ২৫ মিনিটে গোচরণ স্টেশন থেকে সোনারপুর পর্যন্ত যাওয়ার টিকিট কেটেছিল। যে টিকিটের মূল্য ছিল ৫ টাকা। মিঠুন মন্ডল দীর্ঘদিন ধরেই মল্লিকপুর স্টেশনে নেবে নির্দিষ্ট গন্তব্যে দিনমজুরের কাজ করতে যায়। হঠাৎ করে এরকম আঘাত পাওয়ায় বাড়িতে কতদিন বসে থাকতে হবে সে জানে না। দিনা আনে দিন খায় মিঠুনের পরিবার চিকিৎসার খরচ জোগতে হিমশিম খাচ্ছে। কিন্তু এখনো রেল কিংবা সোনারপুর জিআরপি বা সোনারপুর আরপিএফ এর তরফ থেকে মিঠুন বা তার পরিবারের সঙ্গে কোনো রকম যোগাযোগ করা হয়নি। মল্লিকপুর স্টেশনে থাকা রেল কর্মীদের ঘটনা কথা জানানোর পরেও কেন এত অবহেলা তা নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বারুইপুর জিআরপিতে অভিযোগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মিঠুনের পরিবার। মিঠুন অসুস্থ থাকায় এখনো পর্যন্ত তারা অভিযোগ দায়ের করতে পারিনি। কিন্তু তাদের স্পষ্ট দাবি আর্থিকভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিক রেল পাশাপাশি রেল যাত্রীদের নিরাপত্তা ও জোরদার করা দাবি তাদের। রেল থেকেই পাথর ছোরা বন্ধ করতে না পারলে আগামী দিনে আরও ভয়ংকর অবস্থা হবে।





