পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগরের তিনশো বছরেরও বেশী প্রাচীন ডেমুরিয়ার রথ। মারাঠা দস্যুর আক্রমণে একসময়ে ভেঙ্গেছিল এই মন্দির । এবারও রথ হবে মহা ধুমধামে। তারই প্রস্তুতি বৈঠক হলো মৈতনায়।
দিঘার অদূরে তিনশো বছরেরও বেশী প্রাচীন এই ডেমুরিয়ার রথ এবারও হবে মহা ধুমধামে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার রামনগর-২ ব্লকের মৈতনা গ্রাম পঞ্চায়েতের ডেমুরিয়ার রথযাত্রাই কাঁথি মহকুমা ও মহকুমার বাইরেও ডেমুরিয়ার রথ হিসেবেই পরিচিত। দশদিনব্যাপী আয়োজিত রথের মেলায় লক্ষাধিক মানুষের ভিড় হয়।
আজকের প্রস্তুতি বৈঠকে মেলা নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়। এবারের মেলায় থাকছে বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা। আগের বছরের মতো এবারও মেলায় থাকছে বিভিন্ন চমক। বিশেষ করে বিগত বছরের অপ্রীতিকর ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে খাবারের দোকানগুলোতে বিশেষ নজরদারি চালানো হবে। কোন প্রকারই বাসি খাবার বিক্রি করা যাবে না। আজকের প্রস্তুতি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক অখিল গিরি , ট্রাস্টি কমিটির সম্পাদক অলক চৌধুরী, মেলা কমিটির সম্পাদক তমাল তরুদাস মহাপাত্র, সহ-সম্পাদক ওয়াসিম রহমান, রামনগর ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অনুপ গিরি, শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ নিলম রয়, সত্যরঞ্জন রায়, মেম্বার রামকৃষ্ণ বাগ, ব্লক সহ-সভাপতি গীতা দাস প্রমুখ।
তিনশো বছর আগে বর্তমান এগরা থানার বাসুদেবপুরের জমিদার লক্ষ্মীকান্ত রায়ের দান করা জায়গার উপর জগন্নাথদেবের মন্দির স্থাপন করা হয়। আর সেই বছর থেকে শুরু রথযাত্রাও। মৈতনা মেলা কমিটির সম্পাদক তমালতরু দাসমহাপাত্র জানান,জমি দানের আগেও ডেমুরিয়াতে জগন্নাথ দেবের মন্দিরের অস্তিত্ব ছিল। জগন্নাথদেবের বিগ্রহ ছাড়াও প্রচুর স্বর্ণালঙ্কার ও ধনসম্পদও ছিল মন্দিরে। জগন্নাথ মন্দিরের সেই ধনসম্পদের লোভে মারাঠা দস্যু বা বর্গীরা বারবার মন্দিরের উপর আক্রমণ করে ধনসম্পদ লুঠ করে নিয়ে যায়। এমনকী বারবার বর্গীদের আক্রমনের ফলে জগন্নাথ দেবের মন্দিরটিও ধ্বংস হয়ে যায়। পরে রাজা লক্ষ্মীকান্ত রায়ের দান করা জমির উপর মন্দির স্থাপন করা হয়।
পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের মাঙ্গলিক আচার ও নিয়মানুসারেই ডেমুরিয়া জগন্নাথ মন্দিরের পূজার্চনা হয়। এবারের মেলায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে। দিঘা জগন্নাথ মন্দিরে এবার হচ্ছে রথযাত্রা তার সাথে সাথে ডেমুরিয়া রথ যাত্রায় বাড়তি উন্মাদনা থাকবে।
