Select Language

[gtranslate]
২৯শে কার্তিক, ১৪৩২ শুক্রবার ( ১৪ই নভেম্বর, ২০২৫ )

দীপাবলিতে সুগন্ধি মোমবাতি তৈরি করেছে স্বনির্ভর মহিলারা

আলোয় ভরে উঠবে ঘর, তার সঙ্গে এবার ছড়াবে মনভোলানো সুগন্ধিও। দীপাবলির ঠিক আগে চাহিদা তুঙ্গে উঠেছে নানা রঙের সুগন্ধি মোমবাতি বা সেন্টেড ক্যান্ডেল-এর। আর সেই চাহিদাকেই হাতিয়ার করে নিজের জীবনে সাফল্যের আলো জ্বালিয়েছেন হলদিয়ার কাষ্ঠখালি এলাকার বাসিন্দা সুনন্দা মণ্ডল দাস। তিনি একজন বেসরকারি স্কুলের শিক্ষিকাও।

একসময় নিছক শখে নিজের ঘর সাজাতে মোমবাতি জ্বালাতেন সুনন্দা। সেই ভালোবাসাই একদিন পরিণত হল উদ্যোগে। তাঁর কথার, আমি সবসময় মোমবাতি জ্বালাতে ভালোবাসতাম। ভাবলাম, যদি নিজের হাতে বানাতে পারি তাহলে ঘরে ঘরে নিজের তৈরি আলো পৌঁছে দিতে পারব।

সেই ভাবনা থেকেই শুরু হয় তার যাত্রা। প্রথমে অনলাইনে বিভিন্ন ভিডিও দেখে শিখে নেন কীভাবে মোমবাতি তৈরি করা যায়। একাধিকবার ভুলও হয়েছে, ব্যর্থতাও এসেছে, কিন্তু হাল ছাড়েননি তিনি। ধৈর্য আর অধ্যবসায়ে ধীরে ধীরে তৈরি করেন নিজস্ব রেসিপি—সুগন্ধি মোমবাতি তৈরির কৌশল।

প্রথম দিকে আত্মীয়স্বজনের মধ্যে ভাগ করে নিতেন নিজের বানানো মোমবাতি। কিন্তু সেই ছোট্ট শখের কাজই আজ পেরিয়ে এসেছে গণ্ডি। বর্তমানে চাহিদা রয়েছে শুধু পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় নয়, রাজ্য ছাড়িয়ে উড়িষ্যা, বিহার, ঝাড়খণ্ড পর্যন্ত। প্রতিদিনই অর্ডার আসছে অনলাইনে।

দীপাবলি ঘনিয়ে আসতেই কাজের চাপ বেড়েছে বহুগুণে। প্রতিদিন রাত জেগে কাজ করছেন সুনন্দা ও তাঁর সহযোগীরা। বিভিন্ন রঙ, আকার ও ঘ্রাণে তৈরি হচ্ছে মোমবাতি—ল্যাভেন্ডার, রোজ, ভ্যানিলা, স্যান্ডালউড, লেমন—প্রতিটিই অনন্য। জ্বালাতেই চারদিক ভরে যায় মৃদু আলো আর মিষ্টি গন্ধে।

 

শুধু দীপাবলি নয়, জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকী বা অন্যান্য বিশেষ অনুষ্ঠানের জন্যও গ্রাহকদের পছন্দ অনুযায়ী বানিয়ে দেন মোমবাতি। তাঁর তৈরি প্রতিটি ক্যান্ডেলই পরিবেশবান্ধব উপকরণে তৈরি—এটাই তাঁর উদ্যোগের মূলমন্ত্র।

 

সুনন্দা জানালেন, শখ থেকেই শুরু করেছিলাম, কিন্তু আজ এটা আমার উপার্জনের মাধ্যম হয়েছে। ঘরে বসেই কাজ করি, তাই পরিবারকেও সময় দিতে পারি। এখন দু-একজন মহিলা আমার কাছ থেকে শিখছেন, তাঁরাও শুরু করেছেন ছোট পরিসরে ব্যবসা।

 

সুনন্দার এই সাফল্য আজ অনেকের প্রেরণা। বিশেষত সেইসব মহিলাদের কাছে, যারা ঘরে বসেই নিজের প্রতিভা দিয়ে কিছু করতে চান। তাঁর উদ্যোগ প্রমাণ করছে, ইচ্ছে আর পরিশ্রম থাকলে খুব অল্প পুঁজিতেই ঘরে বসে আত্মনির্ভর হওয়া সম্ভব।

 

দীপাবলির উৎসবে যখন চারদিকে আলোয় আলোকিত হবে শহর, তখন সেই আলোর সঙ্গে ছড়াবে সুনন্দার তৈরি মোমবাতির মৃদু গন্ধ।

Related News

Also Read