পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরি আবারও শিরোনামে। এলাকাজুড়ে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি করেছে নাবালিকা ধর্ষণকাণ্ডে বিজেপির নাম জড়িয়ে পড়ার ঘটনা। অভিযোগ, বিজেপি কর্মীর ১৫ বছর বয়সী ছেলের বিরুদ্ধে ৪ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যেই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। কিন্তু ঘটনা এখানেই শেষ নয় — অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব গোটা বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য টাকার খেলা শুরু করেছিল।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিজেপির খেজুরি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কলিপদ মণ্ডল ব্যক্তিগতভাবে চেষ্টা করেন ঘটনাটি “চুপিচুপি মিটমাট” করে ফেলার। অভিযোগ, প্রথমে ভুক্তভোগী পরিবারের হাতে ৩০ হাজার টাকার প্রস্তাব দেওয়া হয় যাতে তাঁরা বিষয়টি প্রকাশ না করেন। কিন্তু পরিবারের তরফে আরও টাকা দাবি করা হলে সেই চুক্তি ভেস্তে যায়। এরপরই পরিবারের সদস্যরা সরাসরি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন, এবং তালপাটিঘাট কোষ্টাল থানার পুলিশের দ্রুত তৎপরতায় নাবালক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এই ঘটনার পর থেকেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে প্রবল বিতর্ক। স্থানীয়দের দাবি, বিজেপি নেতারা শুরু থেকেই এই জঘন্য অপরাধকে ঢাকতে মরিয়া ছিলেন। এমনকি টাকার বিনিময়ে ন্যায়বিচারকে বিকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে তারা। এলাকাজুড়ে এখন তীব্র ক্ষোভ—
“টাকা দিয়ে ন্যায় কেনা যায় না, অপরাধ ঢেকে রাখা যায় না — এবার বিজেপি সেটা বুঝবে,” এমনটাই ক্ষোভের সুর স্থানীয় বাসিন্দাদের কণ্ঠে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, যেহেতু অভিযুক্ত ও ভুক্তভোগী উভয় পরিবারই বিজেপি-ঘনিষ্ঠ, তাই ভবিষ্যতে অভিযোগ প্রত্যাহারের আশঙ্কা পুরোপুরি উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তবে স্থানীয় মানুষের চাপ ও প্রশাসনের কড়া নজরদারিতে এবার ধামাচাপা দেওয়া সহজ হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রমাণের ভিত্তিতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
এদিকে তৃণমূল সহ বিরোধী দলগুলির তরফে বিজেপির ভূমিকার তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। কাঁথি সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি পিজুস কান্তি পণ্ডা জানিয়েছেন, “যে দল টাকায় অন্যায়ের বিচার করতে চায়, তাদের মুখে সমাজরক্ষার বুলি মানায় না।”
খেজুরির এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এখন উত্তাল রাজনীতি — ন্যায়বিচারের দাবিতে সোচ্চার সাধারণ মানুষ, আর বিতর্কের কেন্দ্রে বিজেপি নেতৃত্ব।





