দীর্ঘ আইনি লড়াই শেষে দখলমুক্ত হলো এগরা পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের ত্রিকোণ পার্ক সংলগ্ন কাঁথি মেদিনীপুর রাস্তার সেই বিশ্রামাগারটি। মঙ্গলবার বিকালে আদালতের নির্দেশকে মান্যতা দিয়ে সরকারি নির্দেশে পূর্তদপ্তরের পক্ষে বুলডোজার (জেসিবি) দিয়ে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়। পৌর প্রধান ও লীজ গ্ৰহিতার দীর্ঘ টানাটানির ফলে ক্রমবর্ধমান অস্বাস্থ্যকর পরিস্থিতির অবসান ঘটল। এগরাবাসী স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে কর্তৃপক্ষকে সাধুবাদ জানায়।

জানা গেছে প্রায় শতবর্ষের বেশি সময় ধরে এই বিশ্রামাগারটিতে পথচারী মানুষ আশ্রয় নিত। দূর দূরান্তের লোকেরা এক এক সময়ে রাত্রি নিবাস করত। স্থানীয় বালিকা বিদ্যালয় ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ছাত্রছাত্রীরা গ্রীষ্মে রুদ্রের দাবদাহ এড়াতে আশ্রয় নিত। পরবর্তী কালে প্রাক্তন পৌর প্রধান শংকর বেরার সুপারিশ মেনে জেলা পরিষদ বিশ্রামাগারটিকে লীজ দেয় । স্থানীয় রাজনৈতিক দল, নাগরিক কমিটি, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন এর প্রতিবাদে সরব হয়, ডেপুটেশন দেয় পৌর প্রধান, ও প্রশাসনিক সর্বস্তরে। মানুষের দাবি মেনে দখল মুক্ত করতে মাঠে নামে এগরার চেয়ারম্যান স্বপন নায়ক। এগরা পৌরসভার ১২ নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর জয়ন্ত সাউর ছেলে সায়ন্ত সাউ লিজ নিয়ে সেখানে ‘হরিণঘাটা মিট সেন্টার’ নামে একটি দোকান চালাতেন। দীর্ঘদিন ধরে জনগণের ব্যবহৃত সর্ব সাধারণের প্রোপার্ট এভাবে ব্যক্তি স্বার্থে ব্যবহৃত হওয়ায় চেয়ারম্যানের আইনি পদক্ষেপে বিশ্রামাগারটি দখলমুক্ত করার জন্য চেষ্টা শুরু করেন। সমস্ত কাউন্সিলর চেয়ারম্যানের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান। শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হন।
আদালতের নির্দেশের ফলেই পি ডব্লিউ ডি দীর্ঘ লড়াইয়ের পর আজ বিশ্রামাগারটি দখলমুক্ত করার চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেয়। পূর্ত দফতরের পক্ষে টেন ওয়ান, টেন টু নোটি সার্ভ হওয়ার পর রাজনৈতিক পরস্থিতি পারিপার্শ্বিক কারণে জটিল হয়ে ওঠে। প্রশাসনিক সূর্যাস্ত আইনে বদলি হয়ে যান এগরা মহকুমা শাসক মঞ্জিত কুমার যাদব। নতুন মহকুমা শাসক এসে দায়িত্ব ভার নেন।
কিছুদিন আগে কাউন্সিলর জয়ন্ত সাউ নিজে থেকেই বিশ্রামাগারটি ছেড়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। যদিও জয়ন্ত বাবুর দাবী সম্পূর্ণ সরকারি নিয়ম মেনে এই জায়গা জেলা পরিষদের কাছ থেকে লিজ নিয়ে ব্যবসা করছেন।শেষ পর্যন্ত পি ডব্লিউ ডি র দল জেসিবি নিয়ে এসে ঘরটি ভেঙে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়। তবে দখলমুক্তির এই পদক্ষেপে এগরাবাসী অত্যন্ত আনন্দিত এবং তারা পৌর কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এখন এগরাবাসীর দৃষ্টি নতুন করে বিশ্রামাগার তৈরির দিকে। এলাকার মানুষ আশা করছেন, সেই স্থানে দ্রুত নতুন অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধাযুক্ত একটি বিশ্রামাগার তৈরি করা হোক, যা এলাকার সাধারণ মানুষের কাজে লাগবে।





