পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরা ১ ব্লকের রাসন চকবন্দি গ্রামের বীরেন্দ্র ভুঁইয়া আজ দিশেহারা। দিনমজুরের সামান্য আয়ে যেভাবে সংসার টানতেন, এখন সেই সংসারে নেমে এসেছে এক ভয়াবহ সংকট। পরিবারের একমাত্র ছেলে বিকাশ ভুঁইয়ার দুটি কিডনি সম্পূর্ণ অকেজো হয়ে গেছে। ছেলের চিকিৎসা আর প্রাণ বাঁচানোর লড়াইয়ে আজ চরম দুশ্চিন্তায় গোটা পরিবার।

বীরেন্দ্রবাবুর কোনো জমিজমা নেই, নেই স্থায়ী আয়। দৈনিক মজুরির টাকায় কোনোরকমে চলে সংসার। কিন্তু এখন সেই সংসারের প্রতিটি দিন কাটছে আতঙ্কে ও অনিশ্চয়তায়। ছেলেকে বাঁচাতে মরিয়া বাবা-মা। মায়ের মমতা জয় করেছে ভয়—নিজের প্রাণের ঝুঁকি নিয়েও সন্তানকে বাঁচাতে নিজের একটি কিডনি দান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিকাশের মা গৌরী দেবী।
বর্তমানে ওড়িশার ভুবনেশ্বরের আঈঈমশ হাসপাতালে চলছে বিকাশের চিকিৎসা। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, কিডনি প্রতিস্থাপন করতে প্রয়োজন প্রায় ৬ লক্ষ টাকার বিশাল অঙ্কের খরচ। এই বিপুল অর্থের ব্যবস্থা করা দিনমজুর পরিবারের পক্ষে একেবারেই অসম্ভব হয়ে উঠেছে। তাই এলাকাবাসীর কাছে আর্থিক সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে ভুঁইয়া পরিবার।

এই বিপদের সময়ে সহমর্মিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন গ্রামের মানুষ। এগরা ১ ব্লকের রাসন চকবন্দি গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য ও এলাকার প্রধান শিক্ষক অজিত দাস নিজে এগিয়ে এসেছেন সাহায্যের জন্য। তিনি জানিয়েছেন—
“আমরা প্রায় বারো হাজার টাকা দিয়ে সাহায্য করেছি এই অসহায় রোগীর পরিবারকে। আগামীদিনেও আমরা এই পরিবারের পাশে থাকবো এবং চিকিৎসার খরচ জোগাতে আরও সহযোগিতা করবো।”
অজিতবাবুর পাশাপাশি আরও অনেকেই ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছেন মানবিকতার এই আহ্বানে। বিকাশের চিকিৎসা যেন সম্পূর্ণ হয়—এই আশাতেই দিন গুনছেন মা-বাবা ও গ্রামের মানুষজন।
মানবিকতার এমন সময়ে, সমাজের প্রতিটি মানুষের উচিত সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া—কারণ একটিমাত্র কিডনি প্রতিস্থাপনই হয়তো ফিরিয়ে দিতে পারে এক তরুণের বাঁচার স্বপ্ন।





