Select Language

[gtranslate]
২রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ সোমবার ( ১৭ই নভেম্বর, ২০২৫ )

বাবা হকার:মেয়ে উচ্চ মাধ্যমিকে পেল ৪৮৬ 

প্রদীপ কুমার সিংহ

 

কলকাতা ধর্মতলার রাস্তায় হকারের মেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৪৮৬ নাম্বার পেয়েছে। শুধু তাই নয় স্কুলের সবচেয়ে শীর্ষ নাম্বারের অধিকারী।জল লেবু বিক্রিতা রতন পালের বড় কন্যা শ্রেয়সী পাল রামনগর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় এ বছরে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় স্কুলের মধ্যে শীর্ষ নাম্বার পেয়েছে।

 

রামনগর স্কুলের প্রধান শিক্ষকের দেবাশীষ মিত্রের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় এ বছর স্কুলের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১১১ জন। ৯০% নাম্বার পেয়েছে ৪জন, ৮০%নাম্বার পেয়েছে ১৬ জন, স্টার পেয়েছে ২৬ জন, আর সবাই সেকেন্ড ডিভিশন পেয়েছে।

শ্রেয়শী পাল বাড়ি রামনগর বাজার এলাকায়। মা মিতা পাল গৃহবধূ। শ্রেয়সী গৃহশিক্ষক দুইজনের ছিলেন। তার পাঁচটি বিষয়ে প্রাপ্ত নাম্বার বাংলায় ৯৫ ইংরেজিতে ৯৭ রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ইতিহাসের ৯৭ শিক্ষাবিজ্ঞানে ৯৮। সে কখনো ভাবতে পারেনি নাম্বার এটা হবে। তবে স্কুলের শিক্ষকরা বলছেন মেধা তালিকায় দ্বাদশ তম হয়েছে। ডেলি বাড়িতে এসে ৭-৮ ঘন্টা পড়াশোনা করত।

 

পড়াশুনা ছাড়াও তার আঁকা খুব ভালো লাগতো। কয়েকটি প্রতিযোগিতায় আঁকাতে পুরস্কারও পেয়েছে। আর পছন্দের খাবার বিরিয়ানি ফাস্ট ফুড। তার ইচ্ছা আইন নিয়ে পড়াশোনা করা। বড় হয়ে একজন এডভোকেট হতে চায়। ভারত পাকিস্তানের উপর যে প্রতিশোধ নিয়েছে তাতে করে শ্রেয়সী বলেন খুব ভালো করেছে ভারত নিরীহ পর্যটকদের ওপর নির্মম হত্যার প্রতিবাদে ভারতের এই হামলা।

বাবা রতন পাল বলেন তার দুটি কন্যা শ্রেয়সী বড়, ছোট কন্যা ও এই রামনগর স্কুলে পড়ে। উনি নিজেও রামনগর স্কুলে পড়েছে। বড় মেয়ের রেজাল্টে উনি খুবই আনন্দিত। বুধবার যখন উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল বেরোয় তখন সে ধর্মতলা রাস্তায় লেবু জল বিক্রি করছিল। বাড়ি থেকে ফোন আসার পর আধঘন্টা কারো সঙ্গে কথা বলতে পারিনি চোখ দিয়ে জল বেরিয়ে গিয়েছিল আনন্দে। বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে এই আনন্দের কথা পরে শেয়ার করে। তিনি বলেন মেয়ে যা নিয়ে পড়াশোনা করবে তিনি কষ্ট করেও মেয়ে লেখাপড়ার চালিয়ে যেতে সাহায্য করবে।

 

শ্রেয়শীর মা মিতা পাল বলেন আমাদের পরিবারের এমন রেজাল্ট কোন সদস্য এখনো করেনি এর ফলে তিনি খুবই আনন্দিত হন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তার চোখ দিয়ে আনন্দে অশ্রু ধরা বইতে থাকে। শ্রেয়সী ছোটবেলা থেকেই শান্ত মেয়ে ও পড়াশোনা সঙ্গে আঁকাও খুব ভালোবাসতো। যদিও মোবাইল নিয়েছে মাঝে মাঝে ঘাটাঘাটি করত।

 

শ্রেয়সী এই রেজাল্টের জন্য স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা গর্ববোধ করেন পরে হচ্ছে। এই রকম ধরনের রেজাল্ট এখন এ পর্যন্ত এই স্কুলে হয়নি। স্কুলের পরিচালন কমিটির সভাপতি, সম্পাদক বলেন এ বছরে যা রেজাল্ট হয়েছে উচ্চমাধ্যমিকে বিগত বছরে কোনদিন এরাম হয়নি। তার জন্য নিজেদের খুবই গর্ববোধ করছে। শ্রেয়সীকে স্কুলের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক ও মিষ্টির দিয়ে সম্বর্ধনা দেওয়া হয়।

Related News

Also Read