Select Language

[gtranslate]
২৮শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ শনিবার ( ১৩ই ডিসেম্বর, ২০২৫ )

অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে পুড়িয়ে হত্যা:তিন অভিযুক্তকে সশ্রম যাবজ্জীবন কারাদণ্ড 

অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ দোষী সাব্যস্ত করার পর আজ শুক্রবার তিন অভিযুক্তকে সশ্রম যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও নগদ জরিমানা করলেন কাঁথি মহকুম আদালতের ফাস্ট ট্রাক সেকেন্ড কোর্টের বিচারপতি নুরুজ্জমান আলী। অভিযুক্ত শাশুড়ি নুরজাহান বিবি আঁতিয়া মাসেদা বিবি ও লাইলী বেওয়া ৪৯৮ (ক) ধারা মতে তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০০০ টাকা জরিমানা। জরিমানা অনাদায় দুমাস অতিরিক্ত কারাদণ্ড এর নির্দেশ দেন বিচারক। পাশাপাশি ৩০৪ (বি) মতে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড। এছাড়াও ৩০২ ধারা মতে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে তিরিশ হাজার টাকা নগদ জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দেন। জরিমানা অনাদায় হলে আরো ছমাসের অতিরিক্ত কারাবাস এবং জরিমানা আদায়কৃত অর্থ মৃতা রিনা বিবি মাকে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক নুরুজ্জামান আলী। সূত্রের খবর ২০১৯ সালে কাঁথি দেশপ্রাণ ব্লকের চালতি গ্রাম পঞ্চায়েতের চালতি গ্রামের রিনা বিবির সঙ্গে আব্দুল মজিত এর প্রেম করে বিয়ে হয়। বিয়ের যৌতুকাদি পছন্দ না হওয়ায় গৃহবধূকে চাপ দিতে থাকে অতিরিক্ত পন বাপের বাড়ি থেকে আনার জন্য। গৃহবধূ রিনা বিবির বাবা ইনতাজ আলী খান গরিব হওয়ায় অতিরিক্ত পন দিতে অক্ষম হয়। তারপর অত্যাচার করত শ্বশুর বাড়ির লোকেরা। করোনা কালে ২০২০ সালে এই গৃহবধূকে শ্বশুরবাড়ির থেকে তাড়িয়ে দেয়। তারপর গ্রাম্য সালিশি বসে রিনা বিবিকে তার বাপের পরিবারের লোকেরা শ্বশুরবাড়িতে ছেড়ে দিয়ে আসে। কর্মসূত্রে স্বামী আব্দুল মজিদ বাড়িতে ছিল না। গৃহবধূকে আটক করে রেখে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয় ২০২০ সালের ২৭ এপ্রিল। বিকাল চারটার সময় অগ্নিদগ্ধ গৃহবধূকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিন চার দিন পরে ৩ মে তার মৃত্যু হয়। গৃহবধূর বাবা ইনতাজ আলী খান কাঁথি মহিলা থানায় তার মেয়েকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ দায়ের করে। এই অভিযোগে তার শাশুড়ি ননদ এবং ভাসুর সহ চারজনকে অভিযুক্ত করেন। অভিযুক্তরা হল নুরজাহান বিবি মাসেদা বিবি লাইলী বেওয়া ও ভাসুর শেখ তসরু উদ্দিন।সেই মামলা চলছিল। মামলার সরকারি আইনজীবী ইকবাল হোসেন ১৬ জনের স্বাক্ষ প্রমাণ গ্রহণ করে প্রমাণিত করেন গৃহবধূকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে।। এই মামলায় অভিযুক্ত চারজনের মধ্যে ভাসুর শেখ তাসরু উদ্দিন এর বিরুদ্ধে প্রমাণের অভাবে তাকে বেকসুর খালাস দেন কাঁথি মহাকুম আদালতের ফাস্ট ট্রাক সেকেন্ড কোটের বিচারক নুরুজ্জামান আলী। পাশাপাশি নুরজাহান বিবি, মাসেদা বিবি ও লাইলী বেওয়া কে দোষী সাব্যস্ত করে শুক্রবার সাজা ঘোষণা করেন। এই সাজা ঘোষণা হওয়ার পর নির্যাতিতার মা খুশি বলে জানা গেছে। তিনি বলেন বিচার ব্যবস্থা আছে বলে প্রকৃত দোষীরা শাস্তি পাচ্ছেন। সরকারি আইনজীবী ইকবাল হোসেন বলেন এ ধরনের জঘন্যতম অপরাধের উপযুক্ত সাজা ঘোষণা হয়েছে। এর ফলে সমাজের এ ধরনের অপরাধ কমতে পারে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন। কাঁথি আদালতের অ্যাডিশনাল পি পি মঞ্জুর রহমান খান বলেন এই রায় সমাজের এ ধরনের জঘন্যতম অপরাধ কমাতে সাহায্য করবে।

Related News

Also Read