ফের মধ্যযুগীয় বর্বরতা অব্যাহত এগরায়। একঘরে গোটা পরিবার। নিজের জমি থেকে চাষাবাদ ও ফসল তুলতে বাধা। বন্ধ পানীয় জল, হাট বাজার, দোকানপাট। শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ পুরো পরিবার।
অভিযোগ, বিজেপির মাতব্বরদের নির্দেশে একঘরে ঐ পরিবারটি । পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরা ২ ব্লকের বাথুয়াড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণ চৌমুখ গ্রামের ঘটনা। জমি-জায়গা ও সম্পত্তির বিবাদকে ঘিরে ঘটনার সূত্রপাত।
ঐ গ্রামের বাসিন্দা বিদ্যুৎ বাড়ইয়ের পরিবারের সাথে প্রতিবেশি সুশীল বাড়ই, বেণীমাধব বাড়ই, সুকুমার বাড়ই, বেনু বাড়ই সাথে দীর্ঘদিন ধরেই জায়গা সম্পত্তির বিবাদ চলছিল। বিবাদ চরমে গেলে বিদ্যুৎকে ধরে মারধর করে প্রতিবেশীরা বলে অভিযোগ পরিবারের। এমনকি, সরকারি ট্যাপ থেকে জল নিতে বাধা দেওয়া হয়। চাষের জমি থেকে ধান তুলতে বাধা দেয়া হয় বলেই পরিবারের অভিযোগ। পাশে থাকা পাহাড়পুর বাজারে কোনো জিনিস যাতে ঐ পরিবারকে বিক্রি না করা হয় তাঁর নিদান দেয় স্থানীয় মাতব্বরেরা।
ঐ পরিবারের অভিযোগ তাঁদের প্রতিবেশিদের কথায় প্রভাবিত হয়ে স্থানীয় বিজেপি নেতা দেবাশীষ বর, পঞ্চানন বর, শ্যামসুন্দর বাড়ই, অজিত বর, অশোক ধাড়া সহ বেশ কিছু বিজেপি নেতা কর্মী এই ধরণের অত্যাচার করছে। এমনকি বাজারে থাকা ঐ পরিবারের একটি দোকানে তালা ঝুলিয়ে দেয় বিজেপি নেতারা। জমির ফসল না তুলতে পেরে মাথায় হাত পরিবারের। কিভাবে থাকবেন, কি খাবেন দুশ্চিন্তায় পুরো পরিবার। যদিও এগরা থানায় এই বিষয়ে বার বার অভিযোগ জানিয়েও কোনো সুরাহা হয়নি। শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে চিঠি লিখে যন্ত্রনার কথা জানালো বিদ্যুতের স্ত্রী সুলেখা।
কয়েকদিন পরেই এই জেলায় জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । তাঁর আগেই জেলায় এমন অমানবিক মুখ দেখা গেলো।
শুধু মুখ্যমন্ত্রী নয়, জেলা শাসক, জেলা পুলিশ সুপার, জেলা পুলিশ আধিকারিক, মহকুমা শাসক, ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক, পঞ্চায়েত প্রধান সকলেই অভিযোগ জানিয়ে চিঠি দিয়েছে সুলেখা।
তবে বাথুয়াড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান মৌসুমী সেন জানিয়েছেন, এই বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখবো। যদি তেমন হয় দুই পক্ষকে রেখে আমরা বিষয়টিকে মিটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবো। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি। বিজেপি যুব নেতা অমলেশ পাহাড়ি বলেন, স্বাধীন ভারতে বয়কট বিষয়টি নিন্দনীয় ঘটনা। এই ঘটনা যারা করেছে তাঁদের বলবো বিষয়টি পরিষ্কার করা। আমি খোঁজ নিয়ে দেখেছে। ওটা ওদের নিজেদের পাড়ার সমস্যা। চক্রান্ত করে বিজেপির উপর দোষ চাপানো হচ্ছে। বিজেপির এখানে কোনো ভূমিকা নাই। এখন দেখার বিষয় মুখ্যমন্ত্রী জেলা সফরে আসার আগে এই সমস্যার সমাধান হয় কিনা সেদিকে তাকিয়ে আছে ঐ পরিবারের লোকেরা।