Select Language

[gtranslate]
২৮শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ শনিবার ( ১৩ই ডিসেম্বর, ২০২৫ )

এসআইআর আতঙ্কে ভোগপুরে ৮৩ বছরের কেশিমন বিবির মৃত্যু:নাম না থাকার দুশ্চিন্তা

পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কোলাঘাট থানার ভোগপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ভোগপুর গ্রামের ২৩৩ নম্বর বুথের সেখপাড়ায় চরম উদ্বেগ ও আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে শীড়–এর দাপটে। এই আতঙ্কের বলি হলেন ৮৩ বছরের কেশিমন বিবি। পরিবার ও প্রতিবেশীদের বক্তব্য, ভোটার লিস্টে নাম নেই—এই আশঙ্কাই দিনদিন বাড়িয়ে তুলেছিল তাঁর মানসিক চাপ।

২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম না থাকার বিষয়টি কয়েকদিন ধরে দুশ্চিন্তায় রেখেছিল প্রবীণ কেশিমন বিবিকে। কোনোরকম নোটিশ বা পরিষ্কার ব্যাখ্যা ছাড়াই তালিকায় নাম বাদ যাওয়ার ঘটনায় তিনি অস্থির হয়ে পড়েছিলেন। পরিবার জানায়, এই কয়েকদিন তাঁকে স্বাভাবিক রাখা কঠিন হয়ে পড়েছিল—চিন্তা, ভয়, আতঙ্কে রাতে ঘুমোতে পারতেন না, খাওয়া-দাওয়া পর্যন্ত কমে গিয়েছিল।

একইসঙ্গে বিপাকে পড়েছেন তাঁর ছেলে সেক নাসিরুদ্দিনও। তাঁর নামও ২০০২ সালের তালিকায় না থাকায় দুই প্রজন্মই দুশ্চিন্তার দোলাচলে পড়ে যান। এলাকায় বহু মানুষের মধ্যেই একই আতঙ্ক ছড়িয়েছে, তবে কেশিমন বিবি সেই মানসিক চাপ আর সহ্য করতে পারেননি।

২০ নভেম্বর রাত প্রায় ১০টা ৩০ মিনিট নাগাদ হঠাৎই বুকে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করেন তিনি। পরিবারের সদস্যরা জানান, আতঙ্কে ও মানসিক চাপে তাঁর হার্টের অবস্থাই সবচেয়ে বেশি দুর্বল হয়ে পড়েছিল। মুহূর্তের মধ্যেই তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন এবং শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বাড়িতেই।

 

এই মৃত্যুর খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় নেমে আসে স্তব্ধতা। সাধারণ গ্রামবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও আতঙ্ক—ভোটার তালিকা নিয়ে এই বিভ্রান্তি এবং মানুষের মনে ভয় ঢুকিয়ে দেওয়ার পরিবেশ কি আরও প্রাণহানি ডেকে আনবে? প্রবীণদের নিরাপত্তা ও মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে প্রশাসন কতটুকু সচেতন? এমন প্রশ্ন এখন ঘুরছে প্রতিটি মহল্লায়।

 

ভোগপুর গ্রাম এখন শোক ও আতঙ্কের দোলাচলে স্থবির। স্থানীয়রা প্রশাসনের কাছে দ্রুত তদন্ত ও স্পষ্ট ব্যাখ্যার দাবি জানিয়েছেন, যাতে আর কাউকে এমন আতঙ্কের বলি হতে না হয়। কেশিমন বিবির মৃত্যু এসআইআর এর ভয়ংকর প্রভাবের এক মর্মান্তিক উদাহরণ হয়ে রইল।

Related News

Also Read