পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরা মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় ২ মাসের এক শিশুর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ দেখায় মৃতের পরিজনেরা।

সেই সময় হাসপাতালে প্রহরারত এক সুরক্ষাকর্মীর ওপরে মৃতের পরিজনেরা চড়াও হয়। পুলিশ কর্মীর জামা টেনে হিঁচড়ে ছিঁড়ে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে তাঁকে মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে এগরা থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী হাসপাতালে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। ঘটনাটি ঘিরে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে।

সূত্রের খবর, প্রায় দিন ৭ আগে আলংগিরি এলাকার তপন প্রধান নামের এক ব্যক্তি তাঁর ২ মাসের শিশু পুত্রকে অসুস্থ অবস্থায় এগরা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করেছিল। আজ সকালে ওই শিশুর মৃত্যু হয়। মৃত শিশুর মায়ের দাবী, আমার বাচ্চার জ্বর হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। ৭ দিন ধরে এই হাসপাতালে ভর্তি রেখেছিলাম। আজ আমার বাচ্চা মরে গেল।

মহিলার দাবী, হাসপাতালের ডাক্তার ভালো করে চিকিৎসা করেনি। কোনও সমস্যার কথা বলতে গেলে আমাদের সঙ্গে অত্যন্ত দুর্ব্যবহার করত। বাচ্চাকে অন্যত্র নিয়ে যেতে চাইলেও ছাড়ে নি। মহিলার আরও দাবী, আজ আমার বাচ্চা মরে যেতে ওই সিকিউরিটি কর্মী মুখের ওপর বলে দিল একটা বাচ্চা মরে গেলে আরেকটা আসবে। সেই কারনেই ওনার সঙ্গে ঝামেলা হয়েছে।

স্থানীয় যুবক মৃণাল পন্ডার দাবী, এই হাসপাতালের সিকিউরিটিরা সাধারণ মানুষের সঙ্গে অত্যন্ত খারাপ ব্যবহার করে। শিশুটির মৃত্যুর পর তাঁর বাবার সঙ্গে সিকিউরিটি কর্মী অত্যন্ত খারাপ ব্যবহার করেছেন। মৃত শিশুর বাবাকে ধাক্কা দিয়ে হাসপাতাল থেকে বের করে দিয়েছেন। তার জন্যই শিশুর বাবা উত্তেজিত হয়ে ঝামেলায় জড়িয়েছেন।

মৃণালের অভিযোগ, এই হাসপাতালে নার্স থেকে সুরক্ষা কর্মীদের ব্যবহার অত্যন্ত খারাপ। এই বিষয়ে হাসপাতাল সুপারের কাছে অভিযোগ জানাতে গেলেও কথা বলতে দেওয়া হয় না বলেও অভিযোগ।
যদিও হাসপাতালের সুপার সমীর আচার্য জানিয়েছেন, হাসপাতালে শিশুটিকে খুব খারাপ অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছিল বলে শুনেছি। তাঁর কি কি চিকিৎসা হয়েছিল তা আমরা তদন্ত করে দেখছি। এই বিষয়ে সমস্ত রিপোর্ট আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে পাঠাব। তবে এখনও পর্যন্ত এই শিশু মৃত্যুর ঘটনায় মৃতের পরিবারের তরফে কোনও লিখিত অভিযোগ জমা হয়নি। লিখিত অভিযোগ এলে আমরা উপযুক্ত ব্যবস্থা নেব। সেই সঙ্গে হাসপাতাল সুপারের দাবী, কোনও সুরক্ষা কর্মীর বিরুদ্ধে কোনও প্রকার অভিযোগ থাকলে তা সরাসরি লিখিত অভিযোগ আকারে জানানো যেতে পারে। চারিদিকে অভিযোগ জানানোর বাক্স রাখা আছে। সেই বাক্সেও কেউ অভিযোগ জানায়নি।





