ইন্দ্রজিৎ আইচ
উত্তরবঙ্গের বিধ্বংসী বন্যা ও ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত বিপুল সংখ্যক মানুষের সহায়তায়, ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস (ইস্কন) এবং সৌরভ গাঙ্গুলি ফাউন্ডেশন যৌথভাবে একটি বৃহৎ খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি শুরু করেছে।

এই উদ্যোগের আওতায়, শিলিগুড়ি ও তার আশেপাশের এলাকায় প্রতিদিন প্রায় ২,৫০০ দুর্গত পরিবারের মধ্যে পুষ্টিকর রান্না করা খাবার বিতরণ করা হচ্ছে, এবং অন্তত দশ দিন ধরে এই সেবা অব্যাহত থাকবে, যাতে বিপর্যস্ত মানুষরা নিরাপদে আহার পেতে পারেন।
এই মানবিক উদ্যোগটি সৌরভ গাঙ্গুলি ও ইস্কনের দীর্ঘদিনের সহযোগিতার আরেকটি অধ্যায় রচনা করল। ২০২০ সালের কোভিড লকডাউনের সময়েও, সৌরভ গাঙ্গুলি ফাউন্ডেশন ইস্কনের সঙ্গে যৌথভাবে কলকাতাজুড়ে লক্ষাধিক দরিদ্র পরিবারের মধ্যে খাবার বিতরণ করেছিল — যা বহু মানুষকে সেবার পথে অনুপ্রাণিত করেছিল। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে ইস্কন কলকাতার ভাইস-প্রেসিডেন্ট রাধারমণ দাস বলেন
> “আমরা আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ শ্রদ্ধেয় সৌরভ গাঙ্গুলি ও তাঁর ফাউন্ডেশনের প্রতি, যারা আবারও ইস্কনের পাশে দাঁড়িয়ে বাংলার মানুষের সেবায় অংশগ্রহণ করেছেন। কোভিডের কঠিন সময়ে আমাদের যৌথ উদ্যোগ অসংখ্য পরিবারে আহার ও আশার বার্তা পৌঁছে দিয়েছিল। আজ উত্তরবঙ্গের এই ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতিতেও আমরা একসঙ্গে আছি, যেন কেউ ক্ষুধার্ত না থাকে। এটাই প্রকৃত বাংলার চেতনা — যেখানে সহানুভূতি ও সহযোগিতা সব বাধা অতিক্রম করে।”
সৌরভ গাঙ্গুলি, সৌরভ গাঙ্গুলি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা, বলেন:
> “এই মুহূর্তে আমাদের দায়িত্ব উত্তরবঙ্গের মানুষের পাশে দাঁড়ানো ও সর্বতোভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া। বন্যা ও ভূমিধসে অসংখ্য মানুষের জীবন ও জীবিকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে — এটি সত্যিই হৃদয়বিদারক। এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় আমাদের একত্রিত হয়ে কাজ করতে হবে।
আমি সবসময় ইস্কনের মানবসেবামূলক কাজের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা পোষণ করি — তারা বন্যা, ভূমিকম্প, যুদ্ধক্ষেত্র কিংবা কোভিড মহামারির সময়েও নিরলসভাবে মানবতার সেবা করে গেছেন। ক্ষুধার্তদের আহার ও আশার আলো পৌঁছে দেওয়ার এই নিষ্ঠা সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক। আমার ফাউন্ডেশন আবারও ইস্কনের সঙ্গে এই পবিত্র মানবসেবার কাজে অংশ নিতে পেরে গর্বিত।”
ইস্কনের স্বেচ্ছাসেবকরা শিলিগুড়ি কেন্দ্র ও মোবাইল রান্নাঘর থেকে নিরলসভাবে তাজা খাবার প্রস্তুত ও বিতরণ করছেন, যাতে সবচেয়ে দুর্বল ও দুর্গত পরিবারগুলির কাছে সময়মতো খাবার পৌঁছে যায়।
এই উদ্যোগের মাধ্যমে ইস্কন তাদের দীর্ঘদিনের “ফুড ফর লাইফ” মিশনকে আরও শক্তিশালী করছে — যা শ্রীল এ. সি. ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ, ইস্কনের প্রতিষ্ঠাতা-আচার্যের শিক্ষায় অনুপ্রাণিত, এবং যার মূল উদ্দেশ্য: “কেউ যেন ক্ষুধার্ত না থাকে”।





