Select Language

[gtranslate]
২৮শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ শনিবার ( ১৩ই ডিসেম্বর, ২০২৫ )

নাবালিকাকে অপহরণ করে ধর্ষণ:যাবজ্জীবন সাজা 

প্রদীপ কুমার সিংহ

 

এক নাবালিকাকে অপহরন করে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দন্ডিত করিল বারুইপুর মহাকুমা আদালতের বিচারক ।একই সাথে ৫০ লক্ষ টাকা জরিমানা ও নির্যাতিতাকে ১ লক্ষ টাকা ক্ষতিপুরণের নির্দেশ আদালতের।

 

কুলতলির সানকিজাহানের বাসিন্দা অমর দাস (৩৬)। তিনি বিবাহিত। তবে বিয়ের কয়েক মাসের মধ্যে তার স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যায়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ হুগলী জেলার বাসিন্দা ১৪ বছরের নাবালিকাকে অপহরণ করে নিয়ে আসে। তদন্তে জানা গিয়েছে সেই নাবালিকার বাবা বকাবকি করেছিল।তাই বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় সে। একটি রেল ষ্টেশনে তাকে একা বসে থাকতে দেখে অমর দাস তার সাথে আলাপ করে । তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। তারপর তাকে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসে।

 

বাড়িতে নিয়ে এসে দিনের পর দিন নাবালিকাকে ধর্ষণ করে। শুধু এখানেই নয় আসামীর দাদা ও বৌদির বাড়ি পুরীতেও নাবালিকাকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেও নিয়ে গিয়ে তাকে ধর্ষণ করে অভিযুক্ত। দাদা ও বৌদির আপত্তিতে পুরী থেকে তারা চলে আসে। ফের নিজের বাড়িতে নিয়ে আসে। সেখানে ফের ধর্ষণ। অভিযুক্তের দিদি ও জামাইবাবু এই ঘটনায় ইন্ধন দিত বলে অভিযোগ। নাবালিকাকে বৌবাজারে পতিতাপল্লীতে বিক্রিরও চেষ্টা করা হয়। নাবালিকা হওয়ায় বিক্রি সম্ভব হয়নি। ফের কুলতলিতে নিজের বাড়িতে ফিরিয়ে আনে। ফের ধর্ষণ করা হয়।

এই ঘটনার কথা কুলতলি এলাকার সমাজকর্মী শক্তিপদ মন্ডল বিষয়টি জানতে পেরে কুলতলি থানায় ফোন করে মেয়েটিকে উদ্ধার করেন। তিনিই থানায় ১.০৫.২০২২ তারিখে অভিযোগ দায়ের করেন। কেস নাম্বার – ২৫৯/২২। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ মেয়েটিকে উদ্ধার করে। এবং পরে বারুইপুর আদালতে গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়। তার শারীরিক পরীক্ষা করা হয়। আই.ও শুভময় দাস এই কেসের তদন্তকারী অফিসার হন। তিনি তদন্ত শুরু করেই আসামীকে গ্রেফতার করেন।২০২২ সালের ৩০ জুন তারিখে আদালতে চার্জশিট জমা দেন। বারুইপুর পকসো আদালতে বিচার পর্ব শুরু হয়। মোট ৭জন সাক্ষ্য দেয়।

 

সরকারী আইনজীবী অতসী হালদার সাহা এই মামলায় নাবালিকার পক্ষে সওয়াল করেন। বারুইপুর পুলিশ জেলার ট্রায়াল মনিটরিং সেলের এস আই জয়ন্ত কুমার দাসের তত্ত্বাবধানে এই মামলায় সরকারি কৌশুলিকে বিশেষভাবে সহযোগিতা করা হয়। নাবালিকাকে সুবিচার পেতে সহায়তা করেন। আড়াই বছরের মাথায় পকশো আদালতের বিচারক সুব্রত চ্যাটার্জি এই মামলার রায় ঘোষনা করেন ১৮ জুন বুধবার বিকেল সাড়ে চারটের সময়। রায়ে অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের নির্দেশ দেন। এছাড়া ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন ও অনাদায়ে ১ বছরের জেলের সাজা দেন। মেয়েটিকে ক্ষতিপূরণ বাবদ ১ লক্ষ টাকা দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে । উপযুক্ত সাক্ষ্য প্রমানের অভাবে বাকি আরও দুই অভিযুক্ত আসামীর দিদি ও জামাইবাবু বেকসুর খালাস পায়। তবে আসামি অমর দাস উচ্চ আদালতে আবেদন করবে বলে সূত্রের খবর।

Related News

Also Read