Select Language

[gtranslate]
২৮শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বৃহস্পতিবার ( ১৩ই মার্চ, ২০২৫ )

পূর্ব মেদিনীপুরে সিপিআইএমের আলোচনা সভা: ধর্মনিরপেক্ষতা ও গণতন্ত্র রক্ষার আহ্বান

সংগ্রামের জেলা পূর্ব মেদিনীপুর। ইতিহাস তার সাক্ষী।অবিভক্ত মেদিনীপুর দেশ স্বাধীন করার অবদানে কোন অংশে কম নয় ।বাংলার বহু সাধারণ মানুষ সেলুলার জেলে কারাবাস করেছেন। মেদনীপুরের সুকুমার সেনগুপ্ত সহ অনেক বাঙালি বীরপুরুষ দেশ স্বাধীনতার জন্য আত্ম বলিদান করেছেন।সংবিধান প্রতিষ্ঠা করা এবং প্রজাতন্ত্রের পরিবর্তি গণতন্ত্রের রূপ দেওয়ার ইতিহাস সকলের জানা আছে ।কথাগুলো বললেন সুজন চক্রবর্তী কাঁথির কনভেনশনে।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার স্বাধীনতা সংগ্রামী বীরেন্দ্রনাথ শাসমলের স্মৃতি বীজড়িত বিরেন্দ্র হলে,” বিপন্ন সংবিধান ,ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র ও সম্প্রীতি ” বিষয়ে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয় পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সিপিআইএম পার্টির উদ্যোগে ,আগামী ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি জেলা সম্মেলনকে কেন্দ্র করে। সভায় চক্রবর্তী বলেন ,প্রজাকে নাগরিকতায় এগিয়ে নিয়ে এসেছেন বামপন্থীরা । উপনিবেশবাদ মুক্ত করে ব্রিটিশ শাসনের হাত থেকে পরাধীন ভারত কে রক্ষা করায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিল সুকুমার সেনগুপ্তের মত কমিউনিস্টরা ।নৌ বিদ্রোহীদের পাশে দাঁড়িয়ে ছিল কমিউনিস্টরা। জাতীয় মুক্তি আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিল কমিউনিস্টরা। ভারত স্বাধীন হয়েছিল ।লন্ডনে বসে সিদ্ধান্ত হয়েছিল বাংলা ,পাঞ্জাব ভাগের পরিকল্পনা। শেষমেষ বিদ্রোহের আগুন থামাতে না পেরে ব্রিটিশরা ভারতকে স্বাধীন করতে বাধ্য হয়েছিল। সেই স্বাধীনতার সংগ্রামের ইতিহাসে বিজেপি বা আরএসএসের কোন ভূমিকা ছিল না। বরং মুচলেকা দিয়ে ব্রিটিশের সহযোগিতা করেছিল। তাই এখনো আরএসএস এর মূল শত্রু কমিউনিস্টরা । কারণ আর এস এস বা বিজেপির লক্ষ্য হিন্দু রাষ্ট্র গড়ে তোলা ।আর মুসলমান, ক্রিশ্চান বিরোধীতাকরতে হবে । চক্রবর্তী বলেন, কমিউনিস্টরা ধর্মনিরপেক্ষ ,রাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থায় পক্ষে কথা বলে ।বিভাজনের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। হিটলার কমিউনিস্ট মুক্ত দেশ গড়ে তোলার দাগ দিয়েছিল। ঠিক তেমনি আরএসএস কমিউনিস্ট মুক্ত দেশ গড়ে তোলার কৌশল অবলম্বন করেছে।
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সংবিধান আমাদের ভারতের সংবিধান। ভারত স্বাধীনতার পরে কয়েক বছর ব্রিটিশের নিয়ম-নীতি মেনে দেশ পরিচালিত হয়েছিল ।পরবর্তীকালে সংবিধান রচনার দায়ভার গ্রহণ করেছিলেন বাবা সাহেব আম্বেদকর এর মত লোকজন ।তারপরে ১৯৫০ সালে ২৬ জানুয়ারি আমাদের সংবিধান আত্মপ্রকাশ করেছিল। ভারতের নিজস্বতা এবং মানুষের অধিকার প্রভৃতি নিয়ে তৈরি হয়েছিল ভারতের সংবিধান। ভারত তার গণতন্ত্র প্রিয় মানুষের কথা ভেবে গণতন্ত্র ধর্মনিরপেক্ষ এবং ন্যায় বিচার সমস্ত কিছুই মাথায় রেখে সংবিধান রচিত হয়েছিল ।কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে লক্ষ্য করা গেছে ,বিজেপি ও আরএসএস নানান ভাবে সাধারণ মানুষের অধিকার কেড়ে নিতে চাইছে। তৃণমূল এবং বিজেপির এই ধর্মীয় বিভাজনের গণতন্ত্র ,ন্যায় বিচার ,মানুষের অধিকার ,ধর্মের অধিকার, কাজের অধিকার ,মত প্রকাশের অধিকার কেড়ে নিতে চাইছে।

সমাজের অসাম্য বেড়েছে ,কি অর্থনৈতিক ,কি সামাজিক ক্ষেত্রে ।বেড়েছে বেকারের হার ।ভারতের পরে স্বাধীন হয়েও চীনের মত একটি রাষ্ট্র শিল্প, কারখানায় গোটা বিশ্বের প্রথম সারিতে। বিজেপি, তৃণমূল সুকৌশলে কমিউনিস্টদের আন্দোলনকে বন্ধ করতে চাইছে নানান ভাবে। মানুষের অধিকার রক্ষা, ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র এবং সম্প্রীতি বজায় রাখতে সিপিআইএম তথা কমিউনিস্টরাই সামনের সারিতে লড়াই করবে। সভায় সংগঠনকে আরো শক্তিশালী করে এবং জেলা সম্মেলনকে সফল করার লোককে বক্তব্য রাখেন সিপিআইএম পার্টি পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি উপস্থিত ছিলেন জেলা নেতৃত্ব ভারত মাইতি কানাই মুখার্জি ভবানী বেরা কালিপদ সিট চিত্ত মাইতি বিষ্ণুপদ মান্না সঞ্জিত মাইতি । সভা পরিচালনা করেন সিপিআইএম পার্টির রাজ্য নেতা হিমাংশু দাস।

Related News